জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদহ মাঝপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে এক গৃহবধুকে পরকীয়া প্রেম নিবেদন করে সাড়া না পেয়ে ওই গৃহবধুকে বিপাকে ফেলতে তার বিরুদ্ধে প্রতিবেশীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের মিথ্যা অভিযোগ তুলে গৃহবধুসহ ওই প্রতিবেশীর ওপর হামলা চালিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্র জানায়,জীবননগর উপজেলার হাসাদহ মাঝপাড়ার জনৈক আলমগীর হোসেন একজন পেশাদার ড্রাইভার হওয়ায় তিনি পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য অধিকাংশ সময় বাড়ীতে অনুপস্থিত থাকেন। বাড়ীতে সন্তান সন্ততি নিয়ে থাকেন তার স্ত্রী আসমা খাতুন(৪০)। আর এই সুযোগে একই গ্রামের প্রতিবেশী মৃত আবু মোল্যার ছেলে হানেফ আলী(৪৮) গৃহবধু আসমা খাতুনকে নানা ভাবে উত্যক্ত করে তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসে। এমনকি মোবাইল ফোনের সিম কিনে দিয়ে তা ব্যবহারের জন্য গৃহবধুর মেয়ে আকলিমাকে অনুরোধ করে। কিন্তু কোন ভাবেই গৃহবধু আসমার পক্ষ থেকে মেলে না সাড়া। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হানেফ আলী গৃহবধু আসমাকে সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপ্ন করে বিপাকে ফেলার ষড়যন্ত্র করতে থাকে।
গৃহবধু আসমা খাতুন বলেন,আমি ও আমার মেয়েরা মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজ বাড়ীতে টেলিভিশন দেখছিলাম। ওই সময় হঠাৎ আমাদের বাড়ীর বেড়া ভাঙ্গার শব্দ শুনে আমরা ঘরের ভিতর থেকে বাইরে গিয়ে দেখি হানেফ আলী ও তার ছেলে শামীম তাদের প্রতিবেশী সাইফুল ইসলামকে টানা হেচড়া করে আমাদের বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করানো চেষ্টা করছে এবং তারা বলছে সাইফুল ইসলাম নাকি আমাদের বাড়ী থেকে বের হয়েছে। এ সময় আমি তাদেরকে প্রতিবাদ জানালে হানেফ আলী ও তার ছেলে শামীম আমাকে এলোপাতাড়ী ভাবে মারপিট করে জখম করে।
হাসাদহ মাঝপাড়ার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন,হানেফ আলীদের সাথে আমার মুলত: নির্বাচন কেন্দ্রিক বিরোধ। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে তারা আমাকে ইতিমধ্যেই কয়েক দফায় অত্যাচার নির্য়াতনও করেছে। তারা আমাকে শক্ত প্রতিপক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বী চিন্তা করে আমার পজিশন নষ্ট করতে নানা ভাবে ফন্দি-ফিকির করে আসছে। আমি মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পাওনাদারদের টাকা পয়সা দেয়ার জন্য বাড়ী থেকে বের হই এবং জনৈক ড্রাইভার আলমগীর হোসেনের বাড়ীর পার্শ্ব রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ এসে হানেফ আলী আমাকে ধরে টানা হেচড়া করে আজগুবি মিথ্যা কথা বলতে থাকে আমি নাকি আলমগীরের বাড়ীতে গিয়েছিলাম। এই কথা বলে হানেফ আলী তার ছেলে শামীম,ভাইপো ফারুক হোসেন এবং ভাই উজ্জল হোসেনকে ডেকে আমাকে মারপিট করে জোর করেই তারা আলমগীরের বাড়ীতে প্রবেশের চেষ্টা করে। তারা আলমগীরের বাড়ীর বেড়া ও গেট ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে ঘটনার ব্যাপারে ফাঁয়দা লুটতে। তারা আমাকে যেখানে পাবে সেখানে মারবে বলে হুমকি ধামকী দিচ্ছে। উজ্জল হোসেন আমার ভগ্নিপতি। আমি ও উজ্জল একই ওয়ার্ড থেকে মেম্বার পদে নির্বাচন করা নিয়ে বিরোধ। ঘটনার ব্যাপারে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
হাসাদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান জুম্মাত মন্ডল বলেন,ঘটনার কথা আমরা সবাই শুনছি। তবে কোনটি সত্য আর কোনটি মিথ্যা তা বলা মুসকিল হয়ে পড়েছে। পুরোপুরি না জেনে শুনে আপাতত: কিছুই বলা যাচ্ছে না।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন,ঘটনার ব্যাপারে পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তদন্ত না করে কোন কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি আপাতত: শান্ত আছে। উভয়পক্ষের মধ্যে আর কোন যেন কোন ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে পুলিশি তৎপরতার অব্যাহত আছে।###