জীবননগর নিধিকুন্ডুতে আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী নির্য়াতনের অভিযোগ মামলার প্রস্তুতি

রায়পুর(জীবননগর) প্রতিনিধি:-

জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের নিধিকুন্ডু গ্রামের এক আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে নির্মম নির্য়াতনের অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রীর নিকট যৌতুকের টাকা দাবী করে তা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে স্ত্রী পিতামাতার বাড়ীতে সন্তানসহ তাড়িয়ে দেয়ার তিন মাসের মাথায় আপস নিস্পত্তির কথা বলে আবারও নির্য়াতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের তরিকুল ইসলামের কন্যা সুমিয়া খাতুনের(২৩) সাথে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের নিধিকুন্ডু গ্রামের খানপাড়ার সানোয়ার হোসেন সানু খানের ছেলে আনসার সদস্য আকুল খানের(৩২) গত ৮ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে সাড়ে চার বছর বয়সের একটি সন্তানও রয়েছে। আকুল খানের পারিবারিক অবস্থার উন্নতি করতে গৃহবধু সুমিয়া খাতুনের বাবা-মা তাদের নগদ মোটা অংকের টাকা পয়সা দেয়। পাশাপাশি নামীদামী আসবাবপত্রও প্রদান করে। তারপরও যৌতুকের টাকার জন্য অত্যাচার নির্য়াতন চালাতে থাকে।

গৃহবধু সুমিয়া খাতুনের অভিযোগ তার স্বামী আকুল খান ও শ্বশুর সানু খান তাদের প্রযোজনে আমার নিকট যৌতুক যৌতুক বাবদ আমার পিতামাতার বাড়ী থেকে আড়াই লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি উক্ত টাকা এনে দিতে না পারাই তারা আমাকে একের পর এক অত্যাচার নির্য়াতনের এক পর্য়ায়ে ১৫ অক্টোবর আমাকে শিশু কন্যাসহ আমাকে পিতামাতার বাড়ীতে তাড়িয়ে দেয়। আমি সেখানে প্রায় তিন মাস অবস্থান করার পর তারা আমাকে আপস মিমাংসার শর্তে নেয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়। আমি সেই আশায় জীবননগর থানাধীন বাড়ান্দী গ্রামে আমার মামা আজিজুল হকের বাড়ীতে ১৪ জানুয়ারি বিকাল ৫ টার দিকে অবস্থান করি।

সেখানে আমার স্বামী আকুল খান ও শ্বশুর সানু খান যায়। সেখানে আমাকে তারা বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার আগেই সেই একই ভাবে যৌতুকের টাকার কথা তোলে। এ সময় আমি প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে মারধর করে চলে যায়। আমার মামারা তাদের প্রতি চড়াও হয়। কিন্তু আমি যেহেতু স্বামী সংসার করব,সে কারনে তাদেরকে নিবৃত্ত করি। পরে আমার মামারা জীবননগর হাসপাতালে নিয়ে আমাকে চিকিৎসা করেন।

গৃহবধুর মামা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন,আমার ভাগ্নিকে বিয়ে দেয়ার সময় আকুল খানদের তেমন কিছুই ছিল না। আমরা শুধু ছেলেটাকে দেখে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা যে,এত খারাপ তা,আমাদের জানা ছিল না। তাদের নগদ টাকাসহ অনেক কিছুই দেয়া হয়েছে তাতে তাদের মন ভরেনি। ঘটনার দিন সুমিয়াকে তারা নিয়ে যাবে বলে,আমাদের বাড়ীতে এসে যৌতুকের টাকা কথা বলছে এবং আমাদের সামনেই ভাগ্নী সুমিয়াকে মারধর করল। কিন্তু ভাগ্নীকে সংসার করাতে হবে চিন্তা করে মনের রাগ মনে মিটিয়ে ফেললাম। ঘটনার বিষয়টি শান্তিপুর্ণ নিসপত্তি না হলে মামলার জন্য প্রস্তুত আছি।

অভিযুক্ত আকুল খানের দাবী আমি চাকুরি সুবাদে ঢাকায় থাকি। আমার স্ত্রী আমার বাবা-মায়ের সাথে গন্ডগোল করে চলে গেছে। আমি তাকে আসতে বললে আমার বাড়ীতে না এসে আমাকে উল্টা নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। তার চলে যাওয়ার ব্যাপারে আমি থানায় একটি জিডিও করেছি।

আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার মহাসিন আলী বলেন,ঘটনার ব্যাপারে আমার কোন কিছু জানা নেই। আমার সাথে কেউ কিছু বলেনি।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন,ঘটনার ব্যাপারে শান্তিপুর্ণ নিস্পত্তি না হলে ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগ করলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।###

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *