জীবননগরে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধান চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা

রাজেদুল ইসলাম,জীবননগর অফিস:-

 

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে    ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। শ্রমিক সাশ্রয় ও  কম সময়ে,অধিক ফলনের কারণে উপজেলার কৃষকেরা এ পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

সরজমিনে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধ্বখালী গ্রামের এসএমই কৃষক রাজেদুল ইসলাম বলেন,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউব দেখে এবং সম্প্রতি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কর্তৃক একটি প্রশিক্ষণে গিয়ে সরজমিনে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপনের প্রতি আমার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। সেই আগ্রহ থেকেই এ বছর প্রথম আমার সাড়ে চার বিঘা জমিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপন ধানের আবাদ শুরু করেছি। এতে যেমন শ্রমিক সাশ্রয়,তেমন সময়ও কম লাগে। মাত্র এক লিটার তেল খরচ করলে প্রায় দেড় বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপন করা সম্ভব। সনাতন পদ্ধতির চেয়ে অর্ধেক খরচে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রতি বিঘা জমি চাষ করা যাবে। বর্তমান হিসাব অনুযায়ী প্রতি বিঘা জমিতে দেড় হাজার টাকা  রোপনে সাশ্রয় হবে।

রাইস ট্রান্সপ্লান্টার চালক শাহজামাল বলেন,আমি মাত্র ৫০০ টাকা নিয়ে এক বিঘা জমি রোপন করে দিই। এ মেশিন দিয়ে অল্প জায়গায় অনেক বেশী চারা উৎপাদন করা যায়। এ পদ্ধতে চারা রোপনের সুবিধা হচ্ছে সনাতন পদ্ধতির চেয়ে ফলন কম হলেও দু’মণ বেশী হবে। ২,৪০০-২,৫০০ টাকার স্থলে ১২০০-১৪০০ টাকায় ধান রোপন সম্পন্ন করা যাবে। রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন দিয়ে ধান রোপনে বেশী কুশিতে বেশী ধান উৎপাদন হয়। যতই দিন যাচ্ছে,ততই এ পদ্ধতিতে ধান রোপনের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।

জীবননগর উপজেলা রাইস ট্রান্সপ্লান্টার পদ্ধতি প্রথম ধান রোপন শুরু করেন উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের চাষি রমজান। তিনি বলেন,এ পদ্ধতে ধান রোপন করা হলে একদিকে সময়,অন্যদিকে অর্থ বাঁচবে। আবার ফলনও বেশী হবে। এ পদ্ধতিতে চাষ দেখে প্রথমে অনেক কৃষক অনেক মন্তব্য করবে। তবে ধান রোপনের ১০-১৫ দিনের মাথায় এবং উৎপাদনের সময় সেই একই কৃষক রাইস ট্রান্সপ্লান্টার পদ্ধতিতে ধান রোপনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। মাত্র ৪-৫ জন শ্রমিক ব্যয়ে সব কাজ হয়ে যাবে।

 

জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিসার সারমিন আক্তার বলেন,বর্তমান সময়ে শ্রমিক সঙ্কট ও শ্রমিকের মুল্যও অনেক বেশী। যে কারণে কৃষকেরা চাষে সাশ্র্য়ী হওয়ার জন্য ধান রোপনে মেশিন ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। একটি রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের দাম প্রায় চার লক্ষ টাকা। একজন কৃষক এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিলেই একটি মেশিন পেয়ে যাবেন। বাকী ৭০ ভাগ টাকা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছেন। উপজেলার কৃষকদের মাঝে দিন দিন কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। একই ভাবে আগ্রহী হচ্ছে মেশিন দিয়ে ধান রোপনেও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *