জীবননগরে একের পর এক মোটর সাইকেল চুরি বাইকাররা শঙ্কিত

জীবননগর অফিস:-

 

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অতিসম্প্রতি একের পর এক মোটর সাইকেল চুরির ঘটনায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মোটর সাইকেল মালিকেরা। জীবননগর ‍উপজেলা থেকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চারটি মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে একটি ঘটনায় তিন চোর আটকসহ মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

জীবননগর উপজেলার রায়পুর কৃষ্ণপুর,ধোপাখালী,হাসাদহ,আন্দুলবাড়ীয়া সর্বশেষ জীবননগর শহর থেকে মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোর চক্রটি একের পর এক মোটর সাইকেল কৌশল চুরি করলেও তারা সব সময় থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। মোটর সাইকেল মালিকেরা সরল বিশ্বাসে তাদের মোটর সাইকেলটি রাস্তার পার্শ্বে রেখে অদুরে কিংবা সংলগ্ন স্থানে প্রয়োজনীয় কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগে সংঘবদ্ধ চোরচক্রটি অত্যন্ত কৌশলে মোটর সাইকেলটি নিয়ে চম্পট দিচ্ছে। মালিক শত্রুপক্ষ থেকে মোটর সাইকেল রক্ষা করতে সব ধরনের সতর্ক অবস্থা গ্রহণ করলেও সব সাবধানতাকে নস্যাৎ করে মোটর সাইকেল নিয়ে চলে যাচ্ছে। এতে করে উপজেলার মোটর সাইকেল মালিকদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের মোটর সাইকেলটি রেখে স্বস্তিতে কাজ করবেন সে বিশ্বাস যেন কোন ভাবেই করতে পারছেন না। সব সময় মনের মধ্যে একটা শঙ্কা কাজ করছে,কখন জানি মোটর সাইকেলটি চুরি হয়ে যায়।

ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে জানা যায় যে,গত ২-৩  মাস আগে জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে একটি প্রতারক চক্র কৌশলে ব্যাটারি চালিত ভ্যান গাড়ী কিংবা ইজিবাইক চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল। সে সময় একই ভাবে একের পর এক এসব গাড়ী চুরি হলেও চোরচক্রের সদস্যদের কোন ভাবে আটক করা সম্ভব হয়নি। ভুক্তভোগীদের দাবী চোরচক্রটি এবারও একই ভাবে জীবননগর উপজেলাকে টার্গেট করে তাদের চুরির ধরণ পরিবর্তন করে মোটর সাইকেল চুরি করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে। তাইতে তারা একের পর এক মোটর সাইকেল চুরি করে চলেছে।

এদিকে রোববার রাত সাড়ে  আটটার দিকে আন্দুলবাড়ীয়া আজিম খানের ইট ভাটার রাস্তা থেকে একটি মোটর সাইকেল চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় চোরচক্রের সদস্যরা রাত ১০ টার দিকে পুলিশ-জনতার হাতে আটক হয়। তাদেরকে সোমবার দুপুরের দিকে যখন জীবননগর থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন,ঠিক সেই সময় জীবননগর ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক শফিকুল ইসলামের ইয়ামাহা এফজেড থ্রি-ভার্সন-১৬০ সিসি চুরি হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী প্রভাষক শফিকুল ইসলাম বলেন,আমি সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে মোটর সাইকেলটি আমার কলিগ মশিয়ার রহমানের বাসা সংলগ্ন রাস্তায় রেখে ভিতরে আলোচনা শেষে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি মোটর সাইকেলটি নেই।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন,আন্ত:জেলা মোটর সাইকেল চোরচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। তাদেরকে পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চোরচক্রের পুরো নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানা যাবে বলে ধারণা। প্রভাষক শফিকুল ইসলামের মোটর সাইকেল চুরির ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার ব্যাপারে প্রযুক্তিগত ব্যবহারসহ নানা কৌশলে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে মোটর সাইকেল মালিকদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে যে,মোটর সাইকেলটি যেখানে রাখা হচ্ছে,স্থানটি কতটুকু নিরাপদ। মোটর সাইকেল নিরাপদ স্থানে রাখার পরই কেবল দুরত্বে কাজে যাওয়া উচিৎ। মোটর সাইকেল চোরচক্রের ব্যাপারটি আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। আমরা চোরচক্রকে সনাক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *