চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত

জাহিদ  হাসান  স্টাফ রিপোর্টার :

 

চুয়াডাঙ্গা  জেলার  চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ প্রাঙ্গনে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। হৃদয় হরণ, ডিম সুন্দরী, বিবি খানা, চালতা পাতা, সাইকোহেজেন, রাজ কাঁঠাল, রোহিনি, তানজু, এলিয়ান, নীল সুন্দরি, প্রেমকাড়া, মহিমা, গোলাপসহ মজার মজার নামের সব পিঠার দেখা মিলল। আরও ছিল মালপোয়া, তালের পিঠা, দুধপুলি, ভাপা, চিতই, ডিম পিঠা, নকশি পিঠা, মুগ পাকন, পাটিসাপটা, লবঙ্গ লতিকা পিঠাসহ নানান রঙ ও ঢঙের বিচিত্র রকম পিঠা। নামে যেমন বিচিত্র, দর্শন ও স্বাদেও তাই। বোঝায় যাচ্ছে কতটা উৎবমুখর ছিল এ পিঠা উৎসব। ১৭৫ রকমের পিঠা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ উৎসব। সকালে শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ হতে এ শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুর রশিদ।

এসময় তিনি বলেন, ‘পিঠা উৎসব হচ্ছে আবহমান বাংলার উৎসব-পার্বণের অবিচ্ছেদ্য ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য পাহাড়ি ও বাঙালি প্রত্যেকের সংস্কৃতির শেখড়ের সন্ধান দেয়। পিঠা উৎসবের মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের বাঙালিত্বকে খুঁজে পাই। নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে রাখতে এমন প্রচেষ্টা। পিঠা উৎসবের মাধ্যমে বাঙালির কিছু হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য রক্ষা হচ্ছে। এই ধরণের উৎসব বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যম। এরকম ভিন্ন ধর্মী আয়োজনের মধ্যদিয়ে কলেজে সকল প্রকার সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত থাকবে।’

সভাপতির বক্তব্যে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘এ কলেজে যোগদানের পর ২০১৭ সালে আমি প্রথম পিঠা উৎসবের আয়োজন করি। ২০১৭ থেকে এ আয়োজন হয়ে আসছে। বাঙালির ইতিহাসকে ধরে রাখতে এ পিঠা উৎসব অনবদ্য অবদান রাখবে।’

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর রেজাউল করিম, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, সাবেক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের বিভগীয় প্রধান খোন্দকার রোকনুজ্জামান, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল হাসানসহ চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকবৃন্দ।

পিঠা উৎসবে বাঙালীয়না পোশাক শাড়ি পরিধান করে ছাত্রীরা ও পাঞ্জাবি পরে ছাত্ররা বাহারি পিঠা নিয়ে অংশ নেন। বাংলা বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্রী দীপ্তী খানম বলেন, ‘পিঠা খেলে ঐতিহ্য টিকে থাকবে। এ জন্য আমরা বলছি, ‘পিঠা খাও ঐতিহ্য ধরে রাখো।’ কলেজের বাংলা বিভাগের স্টলের ছাত্রী মিতা হক বলেন, ‘আমরা এবার বিভিন্ন পিঠা নিয়ে আমাদের স্টল সাজিয়েছি। এর মধ্যে ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, ডিম পিঠা অন্যতম।’ এর সঙ্গে যোগ করে স্টলের আরও দু’জন বলেন, ‘এছাড়াও ছিল ঝুলি, মাংস পিঠা, শামুক পিঠা, সূর্যমুখী, নকশা, পাকন পিঠা। উৎসবে অংশগ্রহণ করা অন্য পিঠা স্টলগুলোতেও ছিল পিঠার বৈচিত্র্যতা। উৎসবে আসা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পিঠা খেয়েছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *