জীবননগর অফিস:
জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের ভাবীর অভিযোগ দেবরের বিরুদ্ধে স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে অনৈতিক প্রস্তাব। অন্যদিকে পুত্রবধুর বিরুদ্ধে শ্বাশুড়ীর অভিযোগ তার এক সন্তানের জননীকে ফুঁসলিয়ে অন্যের সাথে গোপন স্থানে পাঠিয়ে দেয়ার। এমন দু’অভিযোগের ভিত্তিতে দু’পরিবারের মধ্যে শুরু হয়েছে হামলা-মামলার ঘটনা। উভয়পক্ষ ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা রেলগেটপাড়ার মিলন হোসেন স্ত্রী মীম আক্তার(৩৫) বলেন,আমার দু’কন্যা সন্তান নিয়ে আমি নিজ বাড়ীতে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমার স্বামী একটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনের রয়েছে। যে কারণে আমি দুই কন্যা সন্তান নিয়ে নিজ বাড়ীতেই অবস্থান করছি। এই সুযোগে আমার চাচা শ্বশুর মৃত ইজা বকস মন্ডলের ছেলে নাসির উদ্দিন(৩৫) আমাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছে। সে মাদকাসক্ত হওয়ায় তার ব্যাপারে পরিবারের কেউ কথা বলতে চান না। এমতাবস্থায় আমি খানিকটা ভয়ে ভয়েই থাকি। প্রায় আমাকে তার সাথে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়ে থাকে। আমি তার প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় সে আমাকে বাড়ী ছাড়া করারও হুমকি দেয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার তার অস্বাভাবিক আচরনের কারণে আমি ভয়ে আমার অপর চাচা শ্বশুর জিন্নাত আলীর বাড়ীতে রাত্রযাপন করি। কিন্তু সেই বাড়ীতে নাসির গভীর রাতে অর্থাৎ রাত একটার দিকে প্রবেশ করে আমি যে ঘরে শুয়ে আছি,সেই ঘরে প্রবেশ করে। আমি তাকে দেখে আর্তচিৎকার দিলে আমার উক্ত চাচা শ্বশুর ঘর থেকে বের হয়ে তাকে চড় থাপ্পড় দিলে সে আমার শ্বশুরকেও মারপিট করে। এ সময় চাচী শ্বাশুড়ী খাদিজা খাতুন ও ননদ সায়মা খাতুন তাকে বাঁধা দিলে তাদেরও মারধর করে। পরে নাসির উদ্দিনের ভাই শহিদুল ছুটে গিয়ে কোন কিছু না জেনে না শুনে তার ভাইয়ের সাথে এক হয়ে আমাদেরকে মারধর করে। পরে তারা আমাকে বাড়ী ছাড়া করতে আমার ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। এখন আমি দু’সন্তান নিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ী বাড়ী ঘুরে বেড়াচ্ছি। ঘটনার ব্যাপারে অতিষ্ঠ হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এদিকে গৃহবধুর মীম আক্তারের শ্বাশুড়ী হালিমা খাতুনের অভিযোগ তার মেয়ে এক সন্তানের জননী সোহাগী খাতুনকে(২২) পুত্রবধু মীম আক্তারের আত্মীয় সম্পর্কের বগুড়ার দু’যুবকের হাতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তুলে দেয়। ওই দুই যুবকের নাম সাব্বির হোসেন ও শাহাদত হোসেন। আমার মেয়ের স্বামী-সন্তান থাকা সত্বেও ওই দুই যুবকের হাতে তুলে দেয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে রাতে নাসির ও শহিদুলদের সাথে মীম আক্তারের ঝগড়া-ঝাটি হয়। তাকে নাসির উদ্দিন কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ মোটে সত্য নয়। পুত্রবধু মীম আক্তার ও আমার দেবর জিন্নাতের স্ত্রী খাদিজা খাতুন মিলে আমার মেয়েকে ওই দু’যুবকের কাছে পৌছে দিয়েছে। তারা আমার মেয়েকে দিয়ে অনৈতিক কাজ কিংবা কোথাও পাচার করার জন্য কোথায় পাঠিয়ে দিয়েছে।
প্রতিবেশীদের দাবী পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে হালিমা খাতুনের মেয়ে সন্তানসহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কোথায় চলে গেছে। আর সেই ঘটনায় সন্দেহের চোখে দেখা হয় গৃহবধু মীম আক্তারকে। এদিকে নাসির উদ্দিনের চাচা জিন্নাত আলী ও চাচী খাদিজার অভিযোগ নাসির উদ্দিন তার আপন চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী মীমকে দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমরা তাকে নানা ভাবে সতর্ক করেও কোন সাড়া মেলেনি।
ঘটনার ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন,উভয়পক্ষ পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা তদন্ত করে জানা যাবে প্রকৃত বিষয় কি। তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।