জীবননগর প্রতিনিধি:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ৬ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান নির্বাচন পরিশর্দনে বলেছেন, ইভিএম হচ্ছে শতভাগ স্বচ্ছতার প্রতীক। এখানে কোনো পক্ষপাতিত্ব করার সুযোগ নেই। আমরা ছয় শতাধিক নির্বাচন করেছি। কিন্তু কোনো পক্ষপাতিত্ব করিনি। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর বেসরকারি ভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান ও মেজর আহমেদ। এদিকে বেলা দেড়টার সময় জীবননগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উথলী সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
এর আগে সকাল ৮ থেকে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে চারটায় শেষ হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন থাকায় নির্ধারিত সময়ের পরেও ভোটগ্রহণ করতে হয়। নির্বাচনে তেমন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর না মিললেও বাঁকা, হাসাদাহ ও উথলী ইউনিয়নে কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে ডুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমি ঢাকা শহর থেকে ভোটের পরিস্থিতি দেখতে ইউনিয়নে এসেছি। এখানে সার্বিক ভাবে সুষ্ঠু, শান্তি পূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোট হচ্ছে। সবার সহযোগিতা এখন পর্যন্ত ৩০% ভোট হয়ে গিয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে নারী,পুরুষ,বৃদ্ধ সাথে কথা বলছি তারা খুব খুশি এবং সুখে সাথে ভোট দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এপর্যন্ত ছয়শোর ও বেশি ইভিএমে ভোট গ্রহন করেছি।এবং ইভিএম সম্পর্কে আমি যতটুকু বলতে পারি এটা একটি স্বচ্ছতা প্রতীক।ভেরি ট্রান্সেফাই সিষ্টেম।ভোটারের উপস্থিতি ছাড়া কেউ ভোট দিতে পারে না। এবং আমি এখানে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, এজেন্ট সবার সাথেই কথা বলেছি এবং তারা এটি যে স্বচ্ছ ভাবে হচ্ছে তা তারা স্বীকার করেছে।”
কোন অপ্রতিকর ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলে,” কোন অপ্রতিকর ঘটনা ঘটে নাই এপর্যন্ত।শুধু তাই নই এক চেয়ারম্যান প্রার্থী অভিযোগ করেছিলো তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছিল। আমি সরেজমিনে সেই কেন্দ্রে গিয়ে দেখি তা সঠিক নয়।অন্য এজেন্টদের সাথে কথা বলেছি তারা বলেছেন তারা আসে নাই। এবং তাদের আরো অভিযোগ ছিলো একজনের ভোট আর একজন দিয়েছে সেটাও সঠিক নয়।পরে সে ক্ষমা চেয়ে চলে গিয়েছে।”
বাঁকা ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারদের ডুকতে দেওয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,”প্রথমে যখন অভিযোগ এসছিলো অভিযোগ পাওয়ার পর পরই সেখানে দায়িত্ব থাকা ম্যাজিস্ট্রেট পৌঁচ্ছে,পুলিশ পৌচ্ছে তারা সেখানে পৌঁছে হান্ড্রেড পার্সেন্ট ইনশিওর করেছেন সেখানে ভোটার, এজেন্ট সকলে পৌচ্ছে।কোন প্রকার অপ্রতিকর ঘটনা ঘটে নাই। হয়তো কিছুটা শুরু হতে পারে কিন্তু সেই শুরুতে সম্পূর্ণ হতে পারে নাই।
জীবননগর উপজেলা ৬ইউপি নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন যারা,উথলী ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল হান্নান ৫ হাজার ৩৬৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী আনসার প্রতীক নিয়ে আফজাজুল রহমান ধীরু পেয়েছেন ৩ হাজার ৪০৫ ভোট।
বাঁকায় ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ৭২০ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো. আব্দুল কাদের প্রধান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাফিজুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ৫৩৪ ভোট।
কেডিকে ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে ৭ হাজার ৬৭৬ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত প্রার্থী খায়রুল বাশার শিপলু। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ১ হাজার ৬১ আনারস প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন তানভির হোসেন রাজিব।
হাসাদাহ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬ হাজার ৪৪৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো. রবিউল ইসলাম বিশ্বাস। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শামসুল আলম আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ হাজার ৫৬৫ ভোট।
রায়পুর ইউনিয়নে ৩ হাজার ৫৬২ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো. তাহাজ্জাত হোসেন মির্জা। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীক নিয়ে মো. সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ১ হাজার ৬৫২ ভোট।
মনোহরপুর ইউনিয়নে ৬ হাজার ৩০৫ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. সোহরাব হোসেন খান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামরুজ্জামান আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ৪৯২ ভোট।
জেলা সদর নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, সুষ্ঠু এ নির্বাচনে সাধারণ মানুষ খুশি। ইউনিয়নগুলোতে প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট নেয়া হয়েছে।