জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়ায় স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে এমন মিথ্যা সংবাদে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন জামাই বাড়ীতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। ঘটনার সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে জামাই-শ্বশুর মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি শুক্রবার দুপুরের দিকে আন্দুলবাড়ীয়া দোসিমানাপাড়ায় সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাকা গ্রামের আশাদুল হক(৫০) বলেন,আমার মেয়ে জামেলা খাতুন(২৫) আন্দুলবাড়ীয়া দোসিমানা পাড়ার মুন্নাফ মন্ডলের ছেলে মোক্তার হোসেনের সাথে বিয়ে দিই। বিয়ের পর থেকেই নানা ভাবে যৌতুকসহ নানা অজুহাতে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। এই অবস্থায় আমি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে মাঠে কাজ করা কালিন সময় আমার জামাই মোক্তার হোসেন আমাকে মোবাইল ফোনে জানায় আমার মেয়ে জামেলা গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে। এ সংবাদ শুনে আমি দিশেহারা। পরবর্তীতে আমরা বাড়ীর লোকজন মিলে জামাই বাড়ীতে গিয়ে দেখি যে,তারা আমার মেয়ে জামেলাকে নির্মম ভাবে নির্যাতন করে বাড়ীতে ফেলে রেখেছে। এ ঘটনায় আমরা তাদেরকে প্রতিবাদ করলে জামাই মোক্তার হোসেন,তার ভাই জসিম উদ্দিন,তার বাবা মুন্নাফ,মা মনোয়ারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আমাকে আমার বৃদ্ধ বাবা নুর হোসেন,স্ত্রী আঞ্জিরা,ছেলে আশিকসহ আমার সাথে থাকা সমস্ত লোককে তাদের বাড়ীতে পেয়ে ইচ্ছামত মারপিট করে আহত করে। আমার নিকট থাকা ৫ হাজার টাকা ও আমার মোবাইল ফোনটি ঘটনার সময় হাতিয়ে নেয়। লোকজন আমাদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মোক্তার হোসেনের বড় ভাই জসিম উদ্দিনের দাবী মোক্তার ও তার স্ত্রী জামেলার মধ্যে ইফতার নিয়ে গন্ডগোল হয়। সেই ঘটনায় মোক্তারের শ্বশুর আশাদুল হক তাদের বাড়ীর লোকজন নিয়ে শুক্রবার দুপুরের দিকে আমাদের বাড়ীতে এসে আমার ভাইয়ের ভুট্টা বিক্রির এক লক্ষ টাকাসহ ভাইয়ের স্ত্রী জামেলাকে তারা নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা বাঁধা দিই। এতে করে তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে,আমার ছোট ভাই মোক্তার এবং আমার মা মনোয়ারাকে আহত করে। আমার ছোট ভাই মোক্তারকে তারা আমাদের বাড়ীতেই মাটিতে ফেলে চটকিয়ে ও মারপিট করে এবং তার গোপন অঙ্গে মারাত্মক ভাবে আঘাত করলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমরা জীবননগর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি এবং ভাই মোক্তারের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে রেখেছি।
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার বলেন,ঘটনার কথা আমি শুনেছি। উভয়পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগও করেছে বলে আমাকে জানিয়েছেন। উভয়পক্ষ সুস্থ্য হলে স্থানীয় ভাবে আপস নিস্পত্তির জন্য বসা হবে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন,ঘটনার ব্যাপারে পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে প্রাথমিক পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। বর্তমানে উভয়পক্ষ নমনীয় আছেন।