দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানির আখ থেকে দেশ বিদেশে পন্য উৎপাদনে রেকর্ড ১’শ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন।

দর্শনা অফিস:-
 দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমান্ঝলের একমাত্র অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি দর্শনা কেরু এন্ড কোম্পানী শুধুমাত্র আখ থেকে চিনি, চিটাগুড়, বায়োফার্টিলাইজার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও উন্নত মানের দেশী – বিদেশী  স্প্রিরিট লিকার উৎপাদন এবং বাজারজাত করে  ২০২২/২৩ অর্থ বছরে ১০০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে  বলে জানিয়েছেন কতৃপক্ষ ।তবে হাইব্রিড জাতের আখ উদ্ভাবন ও উৎপাদন ও আখচাষ বাড়ানো গেলে কেরু কোম্পানীতে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচন হবে বলে এলাকার            আখচাষীরা জানালেন। ৯ মার্চ রবিবার  চিনিকল সুত্রে জানা গেছে ৩ হাজার ৫শ ৭২ একর নিজস্ব জমি নিয়ে ১৯৩৮ সালে দর্শনায় কেরু এন্ড কোম্পানী লিমিটেড নামে একটি কমপ্লেক্স স্হাপিত হয়।কেরুর  নিজস্ব  ২হাজার ৪শ৫০ একর ও এলাকার আখচাষীদের আড়াই হাজার একর জমিতে আখচাষ শুরু করা হয়।কেরুর রসায়নবিদ আঃ হালিম  জানান আখ থেকে চিনি বের করে নেয়ার পর, মোলাসেচ বা চিটাগুড়, ব্যাগাজ বা ছোবড়া ও প্রেসমাড বা গাদ নামে আরো ৩টি উপজাত দ্রব্য  পাওয়া যায়।উপজাত দ্রব্য গুলো প্রক্রিয়া করে কান্ট্রি স্প্রিরিট লিকার,রেক্টিফাইট স্প্রিরিট, এক্সটা নিউট্রা এলকোহল, ডিনেচার্ড স্প্রিরিট, এবসুলিট এলকোহল তৈরি হয়।যা থেকে দেশী স্প্রিরিট ও ৯টি ব্রান্ডের বিদেশী ফরেন লিকার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, প্রেসমাড ও গাদের সাথে স্পেন্টওয়াস বা বর্জপানি দিয়ে বায়োফার্টিলাইজার উৎপাদন করা হয়।পরে বস্তাভর্তি বায়োসার ৫০ এম এল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও ১৮০, ৩৭৫ ও ৭৫০ এম এল বোতলে লিকার স্প্রিরিট উৎপাদন করেন।ঐ বছরে ৩৯ লাখ ২০ হাজার বোতল ফরেন লিকার ও ২৬ লাখ লিটার কান্ট্রি স্প্রিরিট লিকার উৎপাদন করা হয়। কেরুর উৎপাদিত পন্য বিক্রি করতে  নিজস্ব ১৩টি ওয়্যার হাউজ ও ৩টি বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে।মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চলতি বছরে কুয়াকাটা ও কক্সবাজারে দুটি নতুন বিক্রয় কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে, এবং রামু ও রাজশাহীতে দুটি বিক্রয় কেন্দ্র স্হাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে কেরুর জি এম (প্রশাসন)   জানিয়েছেন। ২০২২/২৩ অর্থ বছরে সব কেন্দ্রে কেরুর উৎপাদিত পন্য  চিনি, বায়োফার্টিলাইজার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার কান্ট্রি স্প্রিরিট লিকার ও ফরেন লিকার স্প্রিরিট বাজারজাত ও বিক্রয় মুল্য দাঁড়িয়েছে ৩শ” ৬৭ কোটি টাকা। কেরু চিনিকল আখচাষী কল্যান সমিতির সভাপতি আঃ হাননান ও সাধারন সম্পাদক আঃ বারি জানান অল্প সময়ে  হাইব্রিড জাতের আখ উৎপাদন ও আখচাষ বৃদ্ধি করতে পারলে কেরুর বিরাট সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যেতে পারে।পাশাপাশি চিনি ও আখের মুল্য বাড়াতে হবে, এবং আখের সাথে সাথী ফসল করা বাধ্যতা মুলক করতে হবে বলে জানান।কেরু চিনিকলের ব্যাবস্হাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন  বলেন কেরু প্রতিস্ঠার পর এই প্রথম সর্বচ্চ উৎপাদিত পন্য ৩শ ৬৭ কোটি টাকা বিক্রয় হয়েছে, যা সরকারি কোষাগারে রাজস্ব দিয়ে, ৯টি কৃষি খামার ও চিনির লোকসান সমন্বয় করে ১শ” কোটি টাকা প্রফিট সম্ভব হতে পারে।আগের বছর ২০২১ সালে নিট প্রফিট ছিল ৫০ কোটি ৭০ লাখ ও মহামারি করনার মধ্যে ২০২০ সালে নিট প্রফিট ছিল ২১কোটি টাকা। তিনি জানান গত সপ্তাহে উন্নত পদ্ধতিতে আখচাষ করে ফলন বাড়াতে এবং আখের সাথে সাথী ফসল করতে  নাটোর, ফরিদপুর, মোবারকগন্জ ও কেরু চিনিকলের কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনদিনের এক কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়।সরকারের যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন পরিচালক (অর্থ)  মোঃ খন্দকার আজিম আহম্মদ এনডিসি, যুগ্ম সচিব, করপোরেশন পরিচালক( ইক্ষু ও গবেষনা) জনাব পুলক কান্তি বড়ুয়া প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্যে রাখেন। তিনি  বলেন চলতি বছরে মিলের ৫শ ৯৩ একর অলস জমি ৬ মাসের জন্য স্হানীয়দের মধ্যে লিজ দিয়ে ৯০ লাখ ৯০ হাজার এবং ৩শ৫০ একর মুড়ি আখের জমি লিজ দিয়ে ৮১ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব  হয়েছে।চুয়াডাঙা-২ আসনের সংসদ সদস্য জনাব হাজী মোঃ আলি আজগার টগর বলেন কেরু চিনিকলটি এ অন্চলের একমাত্র অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি,যার মুল কাচমাল আখ,, সেই আখচাষ বাড়াতে নানামুখি কর্মসুচি নেওয়া  হয়েছে,,সাথে সাথে মিলটি আধুনিকায়ন করতে বি এম আর ও অটোমেশন এর কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *