বিশেষ প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গা জেলা সদর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কৌশলে ইজিবাইক,পাখিভ্যান,মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা একের পর এক ঘটতে থাকে। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা দিশেহারা হয়ে পড়লেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে চোর সিন্ডিকেট সদস্যরা। একই ভাবে গত ৮ এপ্রিল দুপুরের দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাড়াবাড়ীয়ার রেজাউল মালিতা তার ইজিবাইকটি অজ্ঞাতনামা চোরেরা চুরি করে নিয়ে যায়। পরে তিনি এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা করেন।
অবশেষে চুয়াডাঙ্গা জেলার মানবিক পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,ইজিবাইক চোর সিন্ডিকেট সদস্যদের গ্রেফতার করতে চুয়াডাঙ্গার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমানকেনির্দেশ প্রদান করলে ওসি মাহবুবুর রহমানসহ এসআই(নিঃ) মোঃ মাসুম বেল্লা, এসআই(নিঃ) ভবতোষ রায় সংগীয় ফোর্সসহ প্রাপ্ত তথ্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৭ এপ্রিল রাত ১২.২০ টার সময় আসামী ১। মোঃ সালেদুজ্বামান সালেদ(২২)-কে তার নিজ বাড়ী হতে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানায় যে, তার ছোট ভাই মোঃ রিপনুজ্বামান রিপন (আব্দুল্লাহ) চুয়াডাঙ্গা শহর হতে ইজিবাইক চুরি করে তাদের বাড়ীর পাশে মোঃ কেরামতের মাধ্যমে কুষ্টিয়া শাহিনুরের কাছে বিক্রয় করে। তখন সংগীয় ফোর্সসহ পার্শ্ববতী কেরামতের বাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্ত, কেরামত পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। সে মময় তার বাড়ীতে থাকা একটি ইজিবাইক গ্রেফতারকৃত আসামী চোরাই বলে জানালে সাধারণ ডায়রী মূলে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ করা হয়। অতপর: আসামী সহ কুষ্টিয়া কাটাইখানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ২। মোঃ শাহিন হোসেন(২৫)-কে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিঙ্গাসাবাদে জানায় তার কাছে বিক্রয় করা ইজিবাইকগুলোর মধ্যে ১টি ইজিবাইক স্বপনের গ্যারেজে আছে, ১টি ইজিবাইক হেলালের নিকট বিক্রয় করেছে এবং অপরটি রাজবাড়ী পাংশায় বিক্রয় করেছে। তখন আসামী শাহিনকে সাথে নিয়ে স্বপনের গ্যারেজ হতে তার দেখানো মতে একটি ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের সাথে নিয়ে আসামী ৩। মোঃ হেলাল(৩৪)-কে কুষ্টিয়া বাসষ্টান্ড এলাকা হতে গ্রেফতার করে জিঙ্গাসাবাদে জানা যায় যে, অত্র মামলার চোরাই ইজিবাইকটি কুষ্টিয়া সদর থানাধীন নগর মোহাম্মদপুর জনৈক জামিরের গ্যারেজে রেখে ভাংগারী হিসেবে ইজিবাইকের কিছু অংশ বিক্রয় করেছে এবং অবশিষ্ট অংশ সেখানে আছে। গ্রেফতারকৃত আসামী সংগীয় ফোর্সসহ সেখানে গিয়ে আসামী মোঃ হেলাল(৩৪)-এর দেখানো মতে অত্র মামলার চোরাই ইজিবাইকের তিনটি চাকা, ইজিবাইকের চেচিসের সাথে সংযুক্ত অংশ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে চোরাই আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। আসামী হেলালের হেফাজতে থাকা ইজিবাইকটির কাগজপত্র তাৎক্ষনিকভাবে আসামী শাহিন উক্ত ইজিবাইকটি চোরাই বলে জানালে সাধারণ ডায়রী মূলে জব্দ করা হয়। এছাড়াও আসামী মোঃ হেলাল(৩৪) চোরাই ইজিবাইকের ০৫ (পাঁচটি) ব্যাটারি বটতৈল কুদ্দুসের অটোওয়ার্কশপে তার ছেলে আসামী ৪। মোঃ সিজান আহম্মেদ রনি(২৮) এর কাছে বিক্রয় করেছে জানালে গ্রেফতারকৃত আসামী এবং জব্দকৃত আলামতসহ উক্ত ওয়ার্কশপে হাজির হয়ে আসামী হেলালের দেখানো ও সনাক্ত মতে আসামী ৪। মোঃ সিজান আহম্মেদ রনি(২৮) কে গ্রেফতার করা হয় এবং তার হেফাজত হতে অত্র মামলার চোরাই ইজিবাইকের ০৫ (পাঁচটি) ব্যাটারি সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হচ্ছে-আলমডাঙ্গা উপজেলার বকসিপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সালেদুজ্জামান সালেদ(২২),রাজবাড়ী উপজেলার পাংশা থানার হাবাসপুর গ্রামের আব্দুল শেখের ছেলে শাহিন হোসেন, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শানপুকুরিয়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে হেলাল(৩৫) এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাড়াদি খালপাড়ার আব্দুল কু্দ্দুসের ছেলে সিজান আহম্মেদ রনি(২৮)। গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট থেকে চারটি ইজিবাইক ও ইজিবাইকের অংশ বিশেষ উদ্ধার করেন।