জীবননগরে পরিবারের অবহেলায় মৃত্যু, লাশ ধরেছিলো পোঁকা

জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা)প্রতিনিধিঃ পরিবারের অবহেলায় করুন মৃত্যু হয়েছে মানসিক ভারসাম্যহীন উম্মে কুলসুমের (৩০)। বাবা-মা মৃত,থাকতেন বড় ভাই-ভাবির আশ্রয়ে। তাদেরই অবেলায় ঠিক কতদিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে ধরনা করতে পারছে না কেউই। তবে পুলিশের ধারণা ৩/৪দিন আগে মৃত্যু হতে পারে। সোমবার সন্ধ্যায় পৌর শহরের কোর্টপাড়া থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহত উম্মে কুলসুম কোর্টপাড়ার মৃত বিল্লাল হোসেনের মেয়ে।
প্রতিবেশিরা জানান, কুলসুম নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করা অবস্থায় হঠাৎ করে মানসিক ভরসাম্যহীন হয়ে পড়ে। সে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করতে থাকে, তারই একপর্যায়ে তার গর্ভে সন্তান আশে। একটি মেয়ে সন্তান প্রসাবের পর শান্ত ভাবেই বাড়িতে থাকতো। কিন্তুু পিতার পরিচয় না থাকায় সন্তানটি অন্যজনের নিটক দত্তক রাখেন তার ভাই মজিবর রহমান ও ভাবি সালমা। সন্তান অন্যত্র থাকায় বার বার ছুটে যেতেন সেখানে। মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাঁকে তাঁর ভাই মজিবরের বাড়ির আলো বাতাস বিহীন একটি কক্ষে ৬/৭ বছর ধরে আটকে রাখেন। খাওয়ার সময় তাঁকে পলিথিনে করে খাবার ছুড়ে দিলেও ঠিকমত পানি দেওয়া হত না। অযত্ন অবহেলায় বদ্ধ ঘরেই  আটকিয়ে রেখেছিলেন তাকে। ঈদের পর গত ২৪ এপ্রিল বাড়ির লোকজন তাঁকে আটকে রেখে কদিনের জন্য আত্মীয় বাড়ি বেড়াতে যায়।তার পর থেকে কেউ তাঁর খোঁজ নেননি। গত সোমবার বাড়ির ভিতর থেকে পঁচা-দূর্গন্ধ বের হলে প্রতিবেশীরা তার সন্ধানে করতে থাকে। কুলসুমের ঘরের ভেতর থেকে পচা-দুর্গন্ধ বের হলে তা বাড়ির লোকজনসহ স্থানীয় লোকজন ঘরে ঢুকে কুলসুমের অর্ধগলিত লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সরেজমিন বাড়িতে গিয়ে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। প্রতিবেশিরা আরো জানান,পরিবারের সদস্যদের অযত্ন, অবহেলা ও অবজ্ঞার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, কুলসুমের লাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তিন থেকে চার দিন আগে তিনি মারা যেতে পারেন। মেয়েটি প্রতিবন্ধী হওয়ায় বাড়ির লোকজন বাইরে থেকে নিয়মিত তাঁকে খাবার দিতেন। তাঁর ভাই মজিবরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে মৃত্যুর বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি। এ ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে অপমৃত্যুর মামলা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *