চুয়াডাঙ্গায় চোখ জুড়ানো প্রশান্তি নিয়ে অগ্নি রাঙ্গা কৃষ্ণচূড়া ফুল

তাহসানুর রহমান শাহজামাল,চুয়াডাঙ্গা:- ১২-০৫-২৩
চুয়াডাঙ্গায় বৈশাখের প্রচন্ড খরতাপে চোখ জুড়ানো প্রশান্তি নিয়ে আসে অগ্নি রাঙ্গা কৃষ্ণচূড়া ফুল। এখন গ্রাম কিংবা শহর সবখানেই প্রকৃতি প্রেমীদেরকে হাতছানি দিচ্ছে বর্নিল কৃষ্ণচূড়া ফুল। কৃষ্ণচূড়ার রংয়ে রঙ্গিন হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গা বিভিন্ন গ্রামগুলো। কৃষ্ণচূড়ার অপরুপ রুপে মোহিত হয়ে উঠছে ভাবুক মন। বাঙলা কাব্য, সাহিত্য ও সংগীতে নানা উপমায় ও ব্যাঞ্জনায় বারবার উঠে এসেছে কৃষ্ণচূড়া ফুলের রুপ সৌন্দর্যের বর্ণনা। কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি পরিচিত একটি ফুল। শোভাবর্ধকারী এ বৃক্ষটি গ্রামের পাশাপাশি এখনো তার নড়বড়ে অস্থিত্ব নিয়ে কোন রকমে টিকে আছে শহরের পার্ক কিংবা পথে প্রান্তরে। আমাদের দেশে মূলত দুই ধরনের কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটতে দেখা যায়। একটি আগুনের মতো উজ্জ্বল লাল অন্যটি লাল হলদেটে। তবে আমাদের দেশে লাল কৃষ্ণচূড়ার প্রাচুর্যতাই বেশী চোখে পড়ে। লাল হলদেটে রংয়ের কৃষ্ণচূড়া বর্তমানে বেশ বিরল। সারা ঢাকা শহরে এখন সব মিলিয়ে গোটা দশেক লাল হলদেটে ফুলের কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে বলে জানা গেছে।লাল হলদেটে ফুলের কৃষ্ণচূড়াকে অনেকে রাধাচূড়া বলে থাকে। রাধাচূড়া ফুলে মূলত লাল ও হলুদের সংমিশ্রন দেখা যায়। তবে কনকচূড়া ফুল সম্পূর্ন রপে হলুদ হয়ে থাকে। আমাদের দেশে কনকচূড়া ফুল তেমন একটা চোখে পড়েনা। কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া এ তিনটি ফুলই পরিবারের সদস্য। আমরা এসব ফুলের প্রেমে পাগল হলেও এ তিনটি ফুলই কিন্তু বিদেশী। ধারনা করা হয় তিন থেকে চারশত বছর আগে এ বৃক্ষগুলো আমাদের দেশে এসেছে। কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার, রাধাচূড়ার জন্ম ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর কনকচূড়ার জন্মস্থান শ্রীলংকা বা অস্ট্রেলিয়া বলে ধারনা করা হয়। ভীনদেশী এ ফুলেল বৃক্ষগুলো আমাদের দেশে এসে নতুন নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে । কথিত আছে হিন্দু পুরাণের রাধা ও কৃষ্ণের নামানুসারে বৃক্ষ দুটির নাম হয়েছে কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়া। তবে কনকচূড়ার নাম হাল আমলে বৃক্ষপ্রেমীরা দিয়েছেন বলে অনুমেয়। গ্রীষ্মে যখন লাল- হলুদ কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া ফুলে ছেয়ে ওঠে সবুজ বৃক্ষ তখন দেখে মনে হয় কোন দক্ষ চিত্রশিল্পী বুঝি তার সুনিপুণ হাতে মেখে দিয়েছে রংয়ের ছটা। কৃষ্ণচূড়ার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য সত্যিই সবাইকে বিমোহিত করে। কৃষ্ণচূড়ার রূপে মুগ্ধ হয়ে ব্যস্ত পথচারীও থমকে তাকায় কিছু সময়ের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *