জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদহ ঘুসিপাড়া জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন কর্তৃক তৃতীয় শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্র বলাৎকারের শিকার হয়েছে। ঘটনাটি মঙ্গলবার ফজর নামাজ শেষে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সংঘটিত হয়েছে। ঘটনার শিকার শিশু ছাত্রকে মারাত্মক আহত অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তার বর্তমান অবস্থা আশঙ্কা মুক্ত। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়েছে।
ঘটনার শিকার ছাত্রের পারিবারিক সূত্র জানায়, জীবননগর উপজেলার হাসাদহ ইউনিয়নের হাসাদহ ঘুসিপাড়ার সেলিম হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন(২২) একই পাড়ার জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। পাশাপাশি মসজিদের মক্তবে এলাকার ছোট শিশু বাচ্চাদের আরবি পড়াতেন। সেখানে প্রতিবেশী এক প্রান্তিক কৃষকের ৯ বছর বয়সের তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া শিশু ছাত্র মসজিদে আরবি পড়তো। ওই মোয়াজ্জিন প্রতিবেশী চাচা সুবাদের হওয়ায় শিশুটি তাকে আদর করে বাবু সম্বোধন করে ডাকতো।
শিশুটির মায়ের অভিযোগ, মোয়াজ্জিন নাজমুল হোসেন সোমবার রাতে তার শিশু পুত্রকে বলে সে যেন,মঙ্গলবার খুব সকালে মসজিদে যায়,তাকে মসজিদ ধোয়া-মুছার কাজ আছে। এ জন্য তাকে দশটি টাকা দেয়ার ও কোমল পানি সেভেন খাওয়ারও প্রলোভন দেয়। সহজ সরল মনে শিশুটি মঙ্গলবার সকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে মসজিদে যান। ছেলেটা মসজিদে পৌছানোর পরপরই মসজিদের মুসল্লিরা চলে যান। অন্যদিকে মক্তবের অন্য ছাত্ররাও ততক্ষণে মসজিদে পৌছায়নি। আর সুযোগে পাষন্ড মোয়াজ্জিন নাজমুল হোসেন মসজিদের গ্লাসের জানালাগুলো একে একে বন্ধ করে। এক পর্যায়ে ওই শিশু ছাত্রের ওপর মোয়াজ্জিন নাজমুল পাশবিক হয়ে ওঠে এবং শিশুটিকে উপর্যুপরি বলাৎকার করে রক্তাক্ত জখম করে। শিশুটি আতঙ্কে পায়খানা পর্যন্ত করে ফেলে। এ অবস্থায় শিশুটি মসজিদ থেকে বাড়ীতে চলে যায় এবং ঘরে চুপচাপ বসে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে শিশুটি তার মায়ের নিকট পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ করে। এসময় তার মা দেখতে পান ছেলের মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
ঘটনাটি শিশুটির পরিবার প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের নিকট প্রকাশ করলে উত্তেজিত জনতা মোয়াজ্জিন নাজমুল হোসেনকে আটক করেন। কিন্তু একটি সুবিধাবাদী মহল কৌশলে মোয়াজ্জিনকে ছাড়িয়ে নিয়ে তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন। ঘটনাটি এলাকার সচেতন অভিভাবক মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে এবং তারা সবাই ঘটনার সাথে জড়িত মোয়িাজ্জিন নাজমুল হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। সেই সাথে নরপশু মোয়াজ্জিন নাজমুলকে যারা পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করেছেন তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার শিশুর মা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,মোয়াজ্জিন নাজমুল এক নরপশু। আমি তার কঠিন শাস্তি দাবী করছি। এমন ঘটনা আমরা জীবনে দেখিনি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন,ঘটনার ব্যাপারে মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত মোয়াজ্জিনকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপরতা অব্যাহত আছে।