জীবননগরে বেপরোয়া মাটি দস্যুতা থামছে না নদী পাড়ের মাটি কাটা ব্যবস্থা নেই প্রশাসনিক

জীবননগর অফিস:-

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কাবলেরচর  এলাকার ভৈরব নদী খননের অবশিষ্ট  মাটি ক্ষমতাসিন দলের একটি চক্র দিনের পর দিন কেটে নিয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে নেই কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা। মাটি দস্যুতা বেপরোয়া হলেও প্রশাসন তাদেরকে দেখেও না দেখার ভান করে কৌশলে পাশ কাটিয়ে চলছে।

সরকারী কোন অনুমতি কিংবা টেন্ডার ছাড়াই মাটি কাটা অব্যাহত আছে। নদী খননের পর নদীর দু’পাড়ের মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ ভাবে মাটি কেটে নেয়ার ফলে নদীর দু’ধারে কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট কৃষকেরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। বর্ষা মৌসুমে নদীর গর্ভে কৃষি জমি ধসে যাওয়ার শঙ্কায় জমির মালিকেরা।

এদিকে উপজেলার মনোরহপুর ইউনিয়নের ধোপাখালী ও  সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামে পুকুর খননের নামে মাটি বিক্রির উৎসব শুরু হয়েছে ।ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে মাটি কাটার হিড়িক। মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের শব্দে অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ। মাটি দস্যুদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইট ভাটা মালিকেরা নদীর  তীর থেকে মাটি কাটায়   ঝুঁকির মুখে পড়েছে খননকৃত ভৈরব নদী ও নদীর দু’ধারে থাকা কৃষি জমি। অপরিকল্পিত ভাবে নদীর  দু’পাড়ের মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। এভাবে নদীর পাড়ের মাটি কেটে নেয়ার কারণে আগামী দু’এক বছরের মধ্যে নদীর অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। কৃষি জমি নদীতে বিলীন হতে পারে।

জীবননগর উপজেলা সুত্রে জানা গেছে ,জীবননগর উপজেলায় ২৫ টি ইট ভাটার কার্যক্রম চালু রয়েছে। এসব ইটভাটার অধিকাংশেরই বৈধ কোন কাগজপত্র নেই।

গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কাবলের চর এলাকায় ভৈরব নদী খননের পর নদীর দু’পাড়ে রক্ষিত মাটি মনোহরপুর গ্রামের ফজুলু ও বাবলু নামের দু’জন মিলে বিভিন্ন ইটভাটায় নদীর মাটি কেটে বিক্রয় করছে। তারা দু’জনই ক্ষমতাসিন দলের কর্মি সমর্থক। তারা দু’জনই উপজেলা ব্যাপী মাটি কাটার জন্য ব্যাপক ভাবে পরিচিত। বাবলুকে সবাই মাটি বাবলু হিসাবে জানে।

একই সাথে রাতের আধারে মিন্টু নামের কথিত এক যুবলীগ কর্মি ধোপাখালী গ্রামে পুকুর খননের নামে প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিয়ে রাতের আধারে জীবননগর শহর দিয়ে বাঁকার বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রয় করলেও তার ব্যাপারে নেই কোন আইনি ব্যবস্থা।

মনোহরপুর গ্রামের একাধীক ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,আমরা গরিব মানুষ। নদীর তীর থেকে মাটি কাটার প্রতিবাদ করলে আমাদের সমস্যা করে। যারা মাটি কেটে বিক্রয় করছে তারা সবাই প্রভাবশালী নেতার আত্বীয় সকলেই ক্ষমতাসিন দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের লোকজন। তাদের বিরুদ্ধে মুখে টিকে থাকা যায় না।

সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাত দিন পুকুর খননের নামে মাটি তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। মাটি বহনকারী ট্রাক্টরগুলো যে ভাবে রাস্তায় চলাচল করছে, তাতে করে যখন তখন একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা প্রতিবাদ করলে তারা বলে, আমাদের ব্যক্তিগত জমিতে মাটি কাটছি, তোমাদের কী?’

জীবননগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার রোকনুজ্জামান বলেন,নদীর তীর থেকে অবৈধ ভাবে কেউ মাটি কাটতে পারবে না,আর যদি কেউ কেটে থাকে তা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *