জীবননগর মারুফদহে রহস্যজনক ডাকাতি নানাজনে নানান প্রশ্ন

জীবননগর অফিস:-

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মারুফদহ গ্রামে এক প্রান্তিক কৃষকের বাড়ীতে রহস্যজনক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি শনিবার দিনগত রোববার গভীর রাতে সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতরা এ সময় নগদ এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় প্রতিরোধের মুখে ডাকাত সদস্যরা তাদের মোবাইল ফোন,হাসুয়া,দা,চাপাতি ফেলে পালিয়ে গেছে। ডাকাতদের মধ্যে দু’জনকে চেনা গেছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মারুফদহ গ্রামের মৃত রাজা মিয়ার ছেলে মিরাজ হোসেন আকাশ(২২) বলেন,আমি প্রতিদিনের মত শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ঘুমিয়ে পড়ি। শনিবার দিনগত রাত অর্থাৎ সোমবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আমার শয়নকক্ষের দরজায় টোকা দিয়ে দরজা খুলতে বলে। আমি আমার  ছোট ভাই মনে করে দরজা খুললে আমার গ্রামের করিম ও ফসালসহ অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জন আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং আমার ঘরে থাকা গরু বিক্রির এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা কোথায় তা বের করে দিতে বলে।

এই সময় আমি জীবনের ভয়ে টাকাগুলো বের করে তাদের হাতে তুলে দিই। ডাকাতদের সাথে আমার কথাবার্তার এক পর্যায়ে আমার চাচাতো ভাই জাকির হোসেন ঘটনা টের পেয়ে একটি লাঠি হাতে দিয়ে তাদের বেধড়ক মারপিট শুরু করলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ব্যবহৃত একটি জুতা,একটি মোবাইল ফোন,একটি দা ও একটি চাপাতি ফেলে যায়। এ সময় আমার আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসে।

ডাকাতদের মধ্যে ফয়সাল দফাদার ও করিম দফাদারকে চেনা যায়। যাদের বাড়ী আমাদের গ্রামেই। বাকীরা অপরিচিত হওয়ায় তাদেরকে চিনতে পারিনি। ফয়সাল ও করিমের বিরুদ্ধে এর আগেও এলাকায় এমন ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফয়সাল দফাদার বলেন,সত্যি কথা বলতে কি শনিবার রাত অনুমান ১০ টার দিকে আমি ও করিম আকাশদের বাড়ী পার্শ্ব রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আকাশের ঘরের ভিতরে একজন নারী আর্তচিৎকার শুনে আমরা জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখছিলাম। আর ওই সময় আকাশদের বাড়ীর লোকজন আমাদেরকে দেখে ফেললে আমরা দৌড়ে পালানোর সময় করিমের লুঙ্গি তারকাটায় বেঁধে গিয়ে পড়ে যায় এবং তার নিকট থাকা মোবাইল ফোন,টাকা ও জুতা পড়ে যায়। আর আমি রাস্তায় থাকা লোকজনের সামনেই পালিয়ে যায়।

সেই ঘটায় এখন আমাদেরকে ডাকাত বানানো হচ্ছে। আসলে ইউনিয়ন পরিষদের ভোট দিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বকে এখন পুঁজি হিসাবে কাজ করা হচ্ছে।

রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার গোলাম সরোয়ার সারত বলেন,ঘটনাটি আমি ডাকাতির ঘটনা বলেই শুনেছি। ভুক্তভোগী পরিবার আমাকে সেই রকমই জানিয়েছেন।

তবে একই ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মিলন হোসেনের দাবী ঘটনাটি ডাকাতি কিংবা চুরি কিছুই না। মুলত: করিম ও ফয়সাল মিরাজের ঘরের পাশের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তারা জানালা দিয়ে খারাপ উদ্দেশ্যে উঁকি-ঝুঁকি মারার সময় ধাওয়া খেয়ে তারা পালিয়ে যায়। এখানে ভিলেজ পলিটিকস কাজ করছে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ(তদন্ত) আবু সাইদ বলেন,ঘটনার ব্যাপারটি আমরা শুনেছি। রায়পুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভুক্তভোগী পরিবারটি এখনও পর্যন্ত ঘটনার ব্যাপারে লিখিত কোন কিছু দেয়নি। ঘটনাটি এলাকায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *