জীবননগর(চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় কার্যক্রম পরিচারিচালনাকারী ‘রুরাল রিকনস্ট্রাকশন ফাউণ্ডেশন’ (আরআরএফ) নামের এক বেসরকারী এনজিও সংস্থার আসাদুজ্জামান(৩৮) ও জামাল খান(৩৫) নামের দু’জন কর্মকর্তাকে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আটক করেছে পুলিশ।পাওনা টাকা আদায়ের জন্য জীবননগর থানার সামনে জড়ো হন ভুক্তভোগীরা।
শুক্রবার (১১ আগষ্ট) ওই দু’কর্মকর্তা বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ। গত শনিবার রাতে ঝিনাইদহ থেকে তাদের আটক করা হয়। এর আগে তারা কার্যালয়ে থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কালীগঞ্জ থানার পিরোজপুর গ্রামের খুদা বক্সের ছেলে আসাদুজ্জামান। তিনি রুরাল রিকনস্ট্রাকশন ফাউণ্ডেশন’ (আরআরএফ) কুষ্টিয়া জোনের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক এবং একই থানার তৈলকূপ গ্রামে মো.আলাউদ্দিন খানের ছেলে জামাল খান(৩৫)।তিনিও একই প্রতিষ্ঠানের ফিল্ডকর্মী।
তারা প্রায় অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে এনজিও কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে ২৪ লক্ষ ৪৯হাজার ৭২৫ টাকার মত আত্মসাৎ করেছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।
ভুক্তভোগী মুক্তার হোসেন বলেন,আমার আরআরএফ এনজিও থেকে ৩লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া ছিলো,১৫টা কিস্তি দেওয়া হলে মাঠ কর্মী জামাল খান বলে অগ্রীম ৬০হাজার টাকা দিলে আগের ঋণ শোধ করে নতুন করে ৭লক্ষ টাকা নিতে পারবো। সে জন্য আমি তাকে অগ্রীম ৬০হাজার টাকা দিই।সে আমাকে ১ সপ্তাহ পর ঋণ দেয়ার কথা জানান। পরে সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আজ দিই কাল দিই করে ২মাস ঘুরাতে থাকে আমি অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমার টাকা জমা না করে তারা টাকা নিয়ে পালিয়েছে।
মো.শাহিন, কিবরিয়া, স্বপন, মামুন হুসাইন, শফিকুল, লিটনসহ অনেক ভুক্তভোগী জানান, রুরাল রিকনস্ট্রাকশন ফাউণ্ডেশন (আরআরএফ) এনজিও সংস্থার কুষ্টিয়া জোনের আঞ্চলিক জীবননগর শাখা থেকে তাদের আগে ঋণ নেওয়া ছিলো। দুই মাস আগে ওই সংস্থার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান ও ফিল্ড কর্মী জামাল খান জানান তাদের আগের ঋণ শোধ করে নতুন নিয়মে সীমিত লাভে লোন দেওয়া হবে। এভাবে প্রতি গ্রাহকের নিকট থেকে ১৪হাজার টাকা থেকে ৫লক্ষ টাকা পর্যন্ত ৭০থেকে ৮০জন গ্রাহকের নিকট থেকে আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। গ্রাহকের ঋণে জন্য চাপ দিলে আজ কাল করে ঘুরাতে থাকে।তখন গ্রাহকের অফিসে যোগাযোগ করলে অফিস কর্তৃপক্ষ জানান তাদের টাকা অফিসে জমা হয়নি।বরং তাদের টাকা আত্মসাৎ করে গত শনিবার (৫শে আগষ্ট) অফিস থেকে জামাল ও আসাদুজ্জামান পালিয়ে গিয়েছে।
পুলিশ জানান, রুরাল রিকনস্ট্রাকশন ফাউণ্ডেশন’ (আরআরএফ) নামের এনজিও সংস্থার মাঠকর্মী জামাল খান ও আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান ঋণ দেওয়ার জন্য তাদের গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম গ্রহণ করে। ঋণ দিতে দেরি হওয়ায় তারা অফিসে খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারেন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে এবং এসব টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। এই সংবাদে তারা সংস্থার কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিলে সংস্থার প্রতিনিধিগণ গ্রাহকের ২৪ লক্ষ ৪৯হাজার ৭২৫ টাকা আত্মসাৎ অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ওই সংস্থার কুষ্টিয়া জোনের সহকারী পরিচালক বাদী হয়ে জীবননগর থানায় মামলা করেন। পরে তাদের ঝিনাইদহ থেকে দু’জন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে।
জীবননগর থানার পরিদর্শক(তদন্ত) আবু সাঈদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আরআরএফ এনজিও সংস্থার সহকারী পরিচালকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই দুই কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে।গত শুক্রবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।