জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানা পুলিশের আয়োজনে ‘শোকে মৃহ্যমান,চেতনায় দীপ্যমান’এই শ্লোগানকে সামনে রেখে শনিবার সকালে উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে ১৫ আগষ্টের শোক দিবসের এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন,চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন,চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন,জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হাফিজুর রহমান,উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ,পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম,সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(দামুড়হুদা-জীবননগর সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা,উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম,উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈশা,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকী,জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান,অফিসার ইনচার্জ(অপারেশন) শিকদার মতিয়ার রহমান,মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান,সাংবাদিক সালাউদ্দিন কাজল।
শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি টগর বলেন,জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে লাল সুর্য পতাকা পেয়েছি আর পেয়েছি বাংলা ভাষা। ৩০ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন একটি রাষ্ট্র পেয়েছি। দেশ স্বাধীনের আগে এদেশের সরকারী বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ছিল পাকিস্তানিরা। কিন্তু আমাদের যোগ্য সন্তানেরা সে সময় কোথাও চাকুরি করতে পারতো না।
পাকিস্তানের এমন বিমাতা সুলভ আচরন জাতির জনকে দারুন ভাবে ভাবিয়ে তুলেছিল। জাতির জনককে স্বাধীনতা সংগ্রামসহ রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রেরণা জুঁগিয়েছিলেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেচ্ছা। দেশ মাতৃকার জন্য বঙ্গবন্ধুকে দীর্ঘ ১৪ বছর জেল খাটতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের রাষ্ট্র ক্ষমতায় রাষ্ট্রের অবকাঠামো নির্মান দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান আকাশ ছোঁয়া হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু পাকিস্তানের এদেশীয় দোসর বিএনপি-জামায়াত বঙ্গবন্ধুকে মেনে নিতে না পারায় তাকে স্ব-পরিবারে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাদের সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৫ আগষ্ট সেনাবাহিনীর বিপদগামী কিছু সদস্য বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যা করে। সেই হত্যাকান্ডের মাইন্ড মাস্টার হিসাবে কাজ করে জিয়াউর রহমান।
মৌলবাদীরা আওয়ামীলীগ সম্পর্কে নানা ফতুয়া দিয়ে থাকেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ সরকারই সবচেয়ে ইসলামের সেবাই কাজ করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-ইসলামী ফাউন্ডেশন,বিশ্ব ইজতেমার জন্য জমি দান করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জন্য বিশেষ সুযোগ করে দেন। আর ইসলামী ফাউন্ডেশনের কারণে আজকে আমাদের শিশু সন্তানেরা ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতার কারণে ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই শ্লোগানকে সামনে সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করছেন।
বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর ধর্মের জন্য এত মায়া কান্না,অথচ ধর্মের জন্য তারা দৃষ্টান্তমুলক কোন কাজই দেশবাসিকে উপহার দিতে পারিনি। কিন্তু জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার কারণে আজ মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা বিসিএস পরিক্ষার অংশ গ্রহনের সুযোগ পাচ্ছেন। কওমী মাদ্রাসাকেও স্বীকৃতি দেয়ার কারণে কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় সার্বজনীন শিক্ষা চালু হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মাদ্রাসা নির্মান আওয়ামীলীগ সরকারের ইসলাম ধর্মের সেবার অন্যতম আর একটি উদাহরণ।
বিএনপি-জামায়াতের দোসরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশ পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। বঙ্গবন্ধুর সকল খুনিদের দেশে এনে তাদের ফাঁসি কার্যকর করতে আবারও সকলকে নৌকা প্রতিকে ভোট দিতে হবে।
এমপি আলী আজগর টগর চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন,এসপি মামুন একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাইতো তিনি বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নিয়ে গবেষণা করেন এবং তার নেতৃত্বে সকল থানায় শোক দিবস পালনে নানা কর্মসুচি পালিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সকল ইউনিটের নেতাকর্মি ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারগন উপস্থিত ছিলেন।