জীবননগর অফিস:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বেনীপুর সীমান্ত দিয়ে রাতের আধারে সহযোগীদের সাথে গরু আনার জন্য ভারতে প্রবেশ করে মিজানুর রহমান মিজান(৫০)। বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তিনি ভারতে অবৈধ পথে প্রবেশ করেন। তার সাথে ভারতে প্রবেশ করা অপর তিনজন বাড়ীতে ফিরে আসলেও চার দিন ধরে নিখোঁজ মিজান।
এ ঘটনায় পরিবারের স্বজনের দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের দাবী মিজান বিএসএফ সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্র জানায়,জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের বেনীপুর ক্যাম্পপাড়ার নবীছদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান মিজান একজন দিনমজুর। মিজান একই গ্রামের মধু মন্ডলের ছেলে বাদল,আরিফের ছেলে জীবন ও কওসার আলীর ছেলে ফারুক হোসেনদের সাথে গত বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অবৈধ পথে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু আনার জন্য ভারতে প্রবেশ করে।
বিএসএফ’র তাড়া খেয়ে তারা সকলেই ফিরে আসলে ভারতের অভ্যন্তরে রয়ে যায় মিজান। গ্রামের অনেকেরই দাবী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে যে,ছবি দেখা গেছে তা মিজানের বলে মনে হলেও পুরোপুরি সনাক্ত করা যাচ্ছে না।
মিজানের স্ত্রী নাসিমা খাতুন বলেন,আমার স্বামী মিজানকে বুধবার রাত আটটা সাড়ে আটটার দিকে বাড়ী থেকে বাদল,ফারুক ও জীবন ভারত থেকে গরু আনার জন্য ডেকে নিয়ে যায়। পরে তারা সকলেই ফিরে এলেও আমার স্বামী বাড়ীতে আসেনি। বাদল আমাকে বলে বিএসএফ তাদেরকে তাড়া করেছিল। মিজান ভারতের মধ্যেই আছে। বাদল আমাকে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে দু’হাজার টাকা দিয়ে বলে তোমার কোন চিন্তা নেই।
এই টাকা দিয়ে বাজার সদয় করেন,মিজান ভারতে তার মামার বাড়ীতে আছে। সুযোগ পেলেই সে চলে আসবে। কিন্তু তারা আমার স্বামীর সাথে কথা বলাচ্ছে না। শুক্রবার বাদল আমাকে বলে ভারতে তার মামার বাড়ীতেও মিজান নেই। পরে শুনছি আমার স্বামী মিজান ভারতে বিএসএফ সদস্যদের হাতে আটক হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে শোনা যাচ্ছে আমার স্বামী ভারতে মারা গেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার লাশের কোন চিহৃ আমরা পাইনি। তবে আমাদের বিশ্বাস মিজান ভারতে মারা গেছেন। বিএসএফ লাশের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে পরিবারের লোকজন একটি সুত্র থেকে জানতে পেরেছেন মিজানের লাশ ভারতের কৃষ্ণপুর মহাকুমা হাসপাতাল মর্গে আছে।
সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার আরিফ হোসেন বলেন,আমি মিজানের পরিবারের নিকট শুনেছি সে বুধবার রাতে ভারতে গরু আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। তবে ভারতে মারা গিয়েছে কি না সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত না।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বলেন,ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মিজানের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তবে সে ভারতে মারা গেছে কিংবা বিএসএফ’র হাতে আটক হয়েছে কোনটাই নিশ্চিত নয়।
ঝিনাইদহের খালিশপুর-৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মাসুদ পারভেজ বলেন,শনিবার সকাল ১১ টার সময় একজন মহিলা মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন যে,তার স্বামী নিখোঁজ হয়েছেন। ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নিকট চিঠি দিয়েছি । এখনও কোন জবাব পাওয়া যায়নি। ঘটনার ব্যাপারে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। তবে মিজান নামের কেহ ভারতে আটক হয়েছে কিংবা মারা গেছে এমন তথ্য আমাদের কাছে আপাতত: নেই। তবে ঘটনার ব্যাপারে আমরা খোঁজখবর অব্যাহত রেখেছি।