জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর শহরের হাসপাতাল সড়কের ইবনে সিনা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে নোয়াজেস হোসেন (৪৮) নামের এক রোগীকে ভুল অস্ত্রপচারের অভিযোগ তুলেছেন তার পরিবার। নোয়াজেসের বর্তমান অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দাবী তাদের ক্লিনিকে যে অপারেশন হয়েছে সেখানে কোন ভুল নেই। রোগীর পেটের সমস্যা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদিকে ঘটনার ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,জীবননগর উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের কাশিপুর দক্ষিণপাড়ার প্রান্তিক কৃষক নোয়াজেস হোসেন(৫০) হার্নিয়ার সমস্যা নিয়ে গ্রামের পল্লী চিকিৎসক কায়দার আলীর সাথে যোগাযোগ করেন।
কায়দার আলী তাকে নিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর জীবননগর শহরের হাসপাতাল সড়কের ইবনে সিনা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে হার্নিয়া অপারেশনের জন্য ভর্তি করেন। তাকে ক্লিনিকে ডা.হাসানুজ্জামান নুপুর রাত ৮ টার দিকে হার্নিয়ার অপারেশন করেন। কিন্তু অপারেশনের পর থেকে তার অবস্থার উন্নতি না হয়ে বরং অবনতি হতে থাকে।
এতে পরিবারের দাবী তাকে ভুল অপারেশন করা হয়েছে। অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়,হার্নিয়া অপারেশনের সময় ভুল করে পেটের অপারেশন করতে গিয়ে পায়খানার নাড়ী কেটে ফেলেছেন। পরে নোয়াজেসকে তার পরিবারের সদস্যরা ২১ সেপ্টেম্বর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সেখানে পরিক্ষা-নিরিক্ষা শেষে ডাক্তার জানান,নোয়াজেসকে ভুল অপারেশন করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে আইসিইউতে রাখতে হচ্ছে। প্লাস্টিকের নাড়ীর মাধ্যমে তাকে বাথরুম করা হচ্ছে বলে পরিবারের দাবী।
এ বিষয়ে ইবনে সিনা ক্লিনিকের কর্মচারী আব্দুল জব্বার দাবি করেন, কোনো ভুল অস্ত্রপচার করা হয়নি। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা.নুপুর আমাদের ক্লিনিকে নোয়াজেস হোসেনকে হার্নিয়ার অস্ত্রপচার করেন।
রোগীর অবস্থা ভালোই ছিল। তবে তারা চিকিৎসকের নির্দেশনা মানেনি। শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরছে। আমরা নোয়াজেসের পেটের অপারেশনই তো করিনি,তাহলে তার নাড়ী কাটবে কি ভাবে?
আসলে নোয়াজেসের পেটের সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করার কারণে তার পরিবারের লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। রোগীর লোকজন তাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করাতে গিয়ে টাকা পয়সার জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এখন তারা আমাদের কাছে সহযোগীতা দাবী করছেন।
এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার নুপুর বলেন, কোনো ভুল অস্ত্রপচার করা হয়নি। সঠিক অস্ত্রপচার করা হয়েছে। অস্ত্রপচারের পর রোগীর কেউ তার সাথে যোগাযোগ করেনি।
জীবননগর থানার উপ-পরিদর্শক মাহাবুব হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ক্লিনিকে গিয়েছিলাম। এবিষয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগী পরিবার বসে নিজেরা সমাধান করবে বলে আমাকে জানিয়েছেন।