জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় দিন দিন আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আত্মহত্যা করা অপরাধ। কিন্তু আইনের প্রয়োগ না থাকায় তা বেড়েই চলেছে। নানা কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটলেও প্রায় সবক্ষেত্রেই বলা হয়ে থাকে যে,আত্মহত্যাকারী মানসিক ভারসাম্যহীন ও নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। আর সেই কারণেই আত্মহত্যা করেছেন।
প্রায়ই উপজেলার কোথাও না কোথাও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এদিকে শনিবার উপজেলার নতুন চাকলা ও খয়েরহুদা গ্রামে পৃথক দু’টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের নতুন চাকলা গ্রামের আশাদুল হকের ছেলে নয়ন হোসেন তার স্ত্রী টিয়া খাতুনকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ উত্তোলন করে। সেই ঋণের কিস্তি সঠিক ভাবে পরিশোধ করতে না পারায় তার স্ত্রীর সাথে প্রায় বিরোধে জড়িয়ে পড়ে।
একই ভাবে ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধকে কেন্দ্র করে তার স্ত্রীর সাথে গত ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে ঘাস পোড়া নামক কীটনাশক পান করে। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে বাড়ীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে মারা যায়।
নিহতের চাচা শহিদুল ইসলাম বলেনন,আমার ভাইপো নয়ন হোসেন এনজিও ঋণের পাশাপাশি লোকজনের কাছে দায়-দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়ে।
ঋণের টাকা শোধ করতে না পেরে পরিবারে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হত। ঋণের টাকা পরিশোধ করা নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ২০ সেপ্টেম্বর রাতে কথা কাটাকাটি হলে ভাইপো নয়ন হোসেন বাড়ীর সকলের অজান্তে ঘাস পোড়া বিষ পান করে। যশোর সদর হাসপাতালে তাকে ৫ দিন চিকিৎসা করার পর বাড়ীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যায়।
এদিকে শনিবার সকালে উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের খয়েরহুদা গ্রামের মানষিক প্রতিবন্দ্বী আনজিয়া বেগম(৬০) নামের এক নি:সন্তান বৃদ্ধা বাড়ীর সকলের অজান্তে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত আনজিয়া বেগম খয়েরহুদা পুর্বপাড়ার মৃত আসাদ উদ্দিনের মেয়ে।
নিহতের পারিবারিক সুত্র জানায়, আনজিয়া বেগম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক প্রতিবন্ধী। পিতা,স্বামী সন্তান কেউ না থাকায় গত কয়েক বছর ধরে ছোট বোন আমেনার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। অন্যান্য দিনের মত শুক্রবারের রাতে খাবার খেয়ে যার যার মত ঘুমিয়ে পড়ে।
কিন্তু রাতের কোন ফাঁকে আনজিয়া বেগম পরিবারের সকলের অজান্তে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী আম গাছের ডালের ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরের দিন শনিবার সকালে ঘুম থেকে ওঠে প্রতিবেশীরা বাগানের মধ্যে তার লাশ ঝুলতে দেখেন।
পরে পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারা তার লাশ উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল প্রতিবেদন পর দুপুর সাড়ে তিনটায় তার লাশ দাফন সম্পূর্ণ করেন।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পরিবার পক্ষে কোন অভিযোগ না থাকায় ময়না তদন্তের ছাড়ায় লাশ দাফনে অনুমতি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।