জীবননগর অফিস:
হতাশাগ্রস্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌর শহরের লক্ষ্মীপুরের জনি শেখ(২৪) নামের এক যুবক বিষপানে আত্নহত্যা করেছেন। রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জনি শেখ পৌর শহরের লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জীবননগর বাজারের ইসলামী ব্যাংক মার্কেটে একটি ষ্টুডিও মালিক ছিলেন। তার মৃত্যুতে পরিবারের শোকের মাতম চলছে।
নিহতের প্রতিবেশী সুত্র জানিয়েছেন, জনি’র প্রথম স্ত্রী সন্তান প্রসব কালে মারা যান। পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে তার দাম্পত্য জীবনে বনাবনি না হওয়ার কারণে সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো। তাদের মধ্যে বনাবনি না হওয়া গত ৪-৫ মাস আগে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এসময় তার প্রায় দু’লক্ষ টাকা গুনতে হয়। এছাড়া ভৈরব নদী খননের সময় তার বসত বাড়িটি নদীর সীমানায় পড়ে যাওয়ায় সেটাও ভাঙ্গা পড়ে। সেখানেও সে ৭-৮ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তার পরে ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। মানুষিক অশান্তি এবং আর্থিক ভাবে ভেঙে পড়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়েন। দিশেহারা হয়ে পড়েন পারিবারিক জীবনেও।
এ অবস্থার মধ্যদিয়ে গত ৪ দিন আগে জীবননগর মহানগর সিনেমা মার্কেটের সামনে থাকা একটি কীটনাশক দোকানে হটাৎ করেই প্রবেশ করে এবং দোকানিকে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগে জনি শেখ দোকান থেকে একটি বিষের(ঘাস পোড়া কীটনাশক) বোতল নিয়ে বোতলের ছিঁপি খুলে তা পান করতে থাকে।
এ সময় দোকানিসহ অন্যান্যরা তার নিকট থেকে বিষের বোতলটি কেড়ে নিয়ে তাকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানেও অবস্থার অবনতি হওয়া তাকে পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুরের দিকে মারা যায়। সন্ধ্যার দিকে তার লাশ বাড়ীতে এসে পৌছালে পরিবারে শোকের ছায়া নামে। পরবর্তীতে ঈশার নামাজ শেষে জীবননগর কেন্দ্রিয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, এবিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। নিহতের পরিবারে কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফন অনুমতি দেওয়া হয়েছে।