জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনেকে আগেই সম্পন্ন হলেও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এখনও উত্তেজনা ও দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। আর সেই আক্রোশে মাঠে যেতে সাহস পাচ্ছেন না বিজয়ী প্রার্থীর কর্মি সমর্থকেরা।
পরাজিত প্রার্থীসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিজয়ী প্রার্থীর কর্মি সমর্থকদের অভিযোগ তারা মাঠের ফসল ও সেচ যন্ত্র নষ্ট করে দেয়ায় মাঠের চাষাবাদ স্বাভাবিক ভাবে করতে পারছেন না।
ঘটনাটি বাজদিয়া গ্রামের উত্তরপাড়া ও দক্ষিনপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষকেরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জীবননগর থানার ওসি ও জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ ও গণপিটিশন দিয়েছেন।
জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন গত কয়েক মাস আগে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়া-মহল্লায় বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীদের কর্মি-সমর্থকদের মধ্যে ছোটখাটো ঘটনা-রটনা থাকলেও বর্তমানে প্রায় স্থানে আর সেই অবস্থা নেই।
কিন্তু আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের বাজদিয়া গ্রামের দু’টি পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে এখনও ভোটের আক্রোস কাটেনি। বাজদিয়া গ্রামের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা বর্তমান মেম্বার জহুরুল ইসলাম ও দক্ষিনপাড়ার পরাজিত মেম্বার প্রার্থী মিজানুর রহমানের কর্মি সমর্থকদের মধ্যে চলছে নানান ঘটন-অঘটন।
বাজদিয়া গ্রামের শতাধিক মানুষের সাক্ষরিত একটি গণপিটিশন সুত্র থেকে জানা যায়,মিজানুর রহমান তার ভাই আনোয়ার এবং তাদের সমর্থক হারুন মোল্যা,মিঠু মিয়া,আতিয়ার,আক্তার হোসেন,খায়রুল ও গোলাপ হোসেনসহ তাদের অজ্ঞাত সহযোগীরা দক্ষিনপাড়ার কৃষকদের মাঠে চাষাবাদে বাঁধা দিচ্ছে। তারা মাঠের সেচ যন্ত্র শ্যালো মেশিনের পাইপ নষ্ট করে দিচ্ছে।
উত্তরপাড়ার কৃষকদের দাবী তারা দক্ষিণপাড়ার প্রতিপক্ষদের অত্যচারে মাঠে ধানের চাষাবাদ করতে পারেনি। আবার চলতি ভু্ট্টা মৌসুমেও তারা সেচ যন্ত্রের কারণে চাষাবাদ করতে পারছে না।
প্রতিপক্ষরা রাতের আধারে মাঠে থাকা শ্যালো মেশিনের পাইপ ভেঙ্গে দিয়ে কিংবা পাইপের ভিতরে ইট-পাথর ও ময়লা-আবর্জনা ফেলে নষ্ট করে দিচ্ছে। এ কারণে তারা আতঙ্কের মধ্যে আছে।
অভিযুক্ত পরাজিত প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজানের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমরা নয় বরং উত্তরপাড়ার লোকজনই আমাদের মাঠের ৫৪ টি শ্যালো মেশিনের পাইপ নষ্ট করে দিয়েছে।
তাদের পাইপ যদি আমরা নষ্ট করতাম,তাহলে তাদের চাষাবাদ হচ্ছে কি ভাবে? মাঠে আসলেই বোঝা যাবে তারা চাষাবাদ করতে পারছে কি পারছে না। তবে আমরা চেয়ারম্যানের সাথে বসে বিবাদ মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি।
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার জহুরুল ইসলাম বলেন,সৃষ্ট বিরোধটি আমরা আপস নিস্পত্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার মহল্লার কৃষকদের অভিযোগ দক্ষিনপাড়ার লোকজন মাঠের শ্যালো মেশিন নষ্ট করে কাজের অনুপযোগী করছে এবং মাঠে গেলে হুমকি ধামকী দিচ্ছে। তবে সত্য মিথ্যা নিয়ে যাচাই করা হয়নি।
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর্জা হাকিবুর রহমান লিটন বলেন,ঘটনার বিষয়টি নিয়ে বাজদিয়া গ্রামে দুই পাড়ার লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলছে। তবে বিষয়টি আমি আপস নিস্পত্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ বলেন,ঘটনার ব্যাপারে একটি গণপিটিশন পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অন্যদিকে ভুক্তভোগীদের থানা পুলিশের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।