জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গা-২(জীবননগর-দামুড়হুদা সদর উপজেলার তিতুদহ,বেগমপুর ইউনিয়ন) আসনে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সিইসি’র আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে আদালতের আদেশে তিনি অবশেষে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরের আগে হাইকোর্টের আপিল বিভাগ থেকে তার প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন বলে সাংবাদিকদেরকে নিশ্চিত করেছেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকর্মি ও সমর্থকদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছাস ও ভোটের আমেজ লক্ষ্য করা যায়।
মীর্জা শাহরিয়া মাহমুদ লল্টু বলেন,প্রার্থীতা বাতিল সংক্রান্তে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে হাইকোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি হয়। শুনানি শেষে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করে এবং আমার প্রার্থীতা ফিরিয়ে দেয়ার আদেশ প্রদান করেন। এই অবস্থায় মীর্জা লল্টুর সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে আর কোন বাঁধা নেই।
নির্বাচন কমিশন যাচাই বাছাই কালে ভোটারদের নমুনা সাক্ষর ও তথ্যের গড়মিল থাকায় তার প্রার্থীতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা । ইসির আপিল আবেদনের শুনানিতে প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যায়। পরে তিনি হাইকোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করলে আদালত তার প্রার্থীতা ফিরিয়ে দেয়ার আদেশ দেন।
মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লল্টু জন্মসুত্রে আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান এবং তারা চার ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি চুয়াডাঙ্গা-২আসনের সাবেক এমপি প্রয়াত মীর্জা সুলতান রাজার ছোট ভাই ও ঢাকাস্থ চুয়াডাঙ্গা সমিতির দীর্ঘদিনের সাধারন সম্পাদক। তিনি তৃর্ণমুল থেকে ওঠে আসা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের একজন পরিক্ষিত সৈনিক এবং অত্যন্ত ক্লিন ইমেজের মানুষ এলাকায় ও দলীয় নেতাকর্মিদের নিকট পরিচিত।
মীর্জা শাহরিয়ার লল্টু ২০১৮ সালে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় না। সে সময় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি। তবে এবার দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ কেউ যেন বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে না পারে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে কোন বাঁধা না থাকায় এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
দলীয় নেতাকর্মিদের দাবী মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ একজন জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজের নেতা। অন্যদিকে তার ভাই সাবেক এমপি প্রয়াত রাজা মিয়ার চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে এখনও ব্যাপক ইমেজ রয়েছে।
তাইতো নেতাকর্মিদের ও সমর্থকদের দাবী তার ভাই ও তার ব্যক্তিগত ইমেজকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী মাঠে তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে জয়ের হাসি হাসতে পারেন। এদিকে হাইকোর্ট থেকে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার আনন্দে দুই উপজেলা জুড়ে আওয়ামীলীগের হতাশ হওয়া নেতাকর্মিরা বেশ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে।
মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লল্টু প্রার্থীতা ফিরে পাওয়া চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বীতা মুলক হতে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তিনি নিজের এবং প্রয়াত ভাই রাজা মিয়ার ইমেজকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে পারবেন বলে নেতাকর্মিদের বিশ্বাস।
ভোটের শুরুতেই বর্তমান এমপি নৌকা প্রতিকের প্রার্থী হাজী আলী আজগার টগর’র বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ,দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মঞ্জু,
জীবননগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক উপাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম,সাধারন সম্পাদক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ অমল। এসব নেতাদের পাশাপাশি হেভিওয়েট দু’ডজন নেতা মীর্জা লল্টুর কট্টর সমর্থক হিসাবে পরিচিত।
তারা সবাই মিলে মীর্জা লল্টুর পক্ষে নিবেদিত হয়ে কাজ করলে ভোটের মাঠের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে বলে ভোটারদের আলোচনায় উঠে আসছে।
উল্লেখ্য, এ আসনে আ’লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী তিনবারের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর,জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতিকের অ্যাড.রবিউল ইসলাম,জাসদ মশাল প্রতিকের দেওয়ান ইয়াসিন উল্লাহ,ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ইদ্রিস চৌধুরি,জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতিকের আব্দুল লতিফ যুবরাজ,
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন ট্রাক প্রতিকের হাসেম রেজা, ঈগল পাখি প্রতিকের নুর হাকিম। তফশিল অনুযায়ী ৫ জানুয়ারি প্রচারণার শেষ দিন এবং ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহন হবে।