জীবননগর অফিস:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুর রশিদের বাড়ীতে সরকারি টিসিবি পণ্য আছে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন মাই টিভি ও সময়ের সমীকরণের পত্রিকার জীবননগর উপজেলা প্রতিনিধি মিঠুন মাহমুদ (৩১), দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি আজিজুর রহমান ডাবলু (৩৫) ও দৈনিক গ্রামের কাগজের প্রতিনিধি তুহিনুজ্জামান তুহিন।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুর রশিদ ও তার ভাই তরিকুল ইসলাম তরির নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর এ হামলা করা হয়।
মাই টিভি ও সময়ের সমীকরণের প্রতিনিধি মো. মিঠুন মাহমুদ বলেন, একটি গোপন সূত্রে জানতে পারি, মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুর রশিদ দীর্ঘদিন যাবত গোপনে কৌশল অবলম্বন করে অন্য মানুষের ভুয়া নাম ব্যবহার করে টিসিবির কার্ড তৈরি করে টিসিবির পণ্য আত্মসাৎ করে আসছেন। তিনি সম্প্রতি বেশ কয়েকজনের টিসিবির পণ্য তুলে বাড়ি নিয়ে গেছেন।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি, সাংবাদিক এআর ডাবলু ও তুহিন তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে গিয়েছিলাম। জিজ্ঞাসার একপর্যায়ে আব্দুর রশিদের স্ত্রী বলেন, তার স্বামী টিসিবির পণ্য রান্না ঘরে এনে রেখেছন।
আমরা সেখানে টিসিবির দুই বস্তা চাল আর কিছু টিসিবির তেল দেখতে পাই। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ইউপি সদস্য আব্দুর ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করতে থাকেন।
একপর্যায়ে আব্দুর রশিদ (৪২) তার ভাই তরিকুল ইসলাম তরির (৪৬) নেতৃত্বে আব্দুর রশিদের ছেলে আমির হামজা অঙ্কন (২৫), মৃত মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে হাসিবুর রহমান সুমনসহ (৩০) আরও ৪-৫ জন আমাদের ওপর হামলা করেন। এসময় আমাদের কাছে থাকা ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করে।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, টিসিবির ডিলারদের কাছ থেকে অনেক মানুষ তেল, ডাল নিলেও চাল নেননি। আমি সেখান থেকে দুই বস্তা চাল কিনে এনেছিলাম এলাকার গরিব মানুষের ঈদের সময় দেয়ার জন্য। আমি বাইরে কাজে থাকায় চাল বিতরণ করতে দেরি হয়েছে। আমার বাড়ীতে টিসিবির কোন তেল ছিল না।
মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি এখনো শোনেনি। তিনি খোঁজ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বলেন,ঘটনার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিক ভাবে পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ বলেন, আমি বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানালাম। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয়া হবে।
এদিকে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হওয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে হামলাকারী মেম্বার ও তার দোসরদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন। অন্যথায় রাজপথে আন্দোলনে নামতে বাঁধ্য হবেন।