জীবননগর অফিস:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার পুরাতন চাকলায় এক গৃহবধু গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। স্বামীর সাথে একই ঘরে ঘুমিয়ে থাকলেও স্বামী জানে তার স্ত্রী কখন গলায় রশি দিয়েছে।
মৃত্যুটি নিয়ে রহস্য দানা বাঁধলেও পরিবারের দাবি নিহত গৃহবধু নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি শনিবার ভোর রাতে সংঘটিত হয়েছে।
নিহতের পারিবারিক সুত্র জানায়,ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর সলেমানপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক শহিদুল ইসলামের ছেলে সুমনের সাথে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পুরাতন চাকলা গ্রামের বাবর আলীর মেয়ে বৃষ্টি খাতুনের(১৯) গত ৩ বছর আগে বিয়ে হয়।
বিবাহের কিছুদিন পর সুমন হোসেন তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ী পুরাতন চাকলায় ঘর জামাই হিসাবে বসবাস শুরু করে। তাদের দাম্পত্য জীবনও ভালই চলছিল।
তবে তাদের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে কোন সন্তানাদি হয়নি।
এদিকে গৃহবধু বৃৃষ্টি খাতুন পেটের আলসার,জরায়ু ইনফেকশনসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন চিকিৎসকের নিকট নিয়েও তাকে সুস্থ করা যায়নি।
এটা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য থাকলেও সম্পর্কের অবনতি ছিল না। তারা প্রতিদিনের মত শুক্রবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে একই ঘরে স্বামী-স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়ে।
কিন্তু স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন কখন স্বামীর পাশ থেকে উঠে ঘরের আড়ায় নিজের ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে স্বামী তা টেরই
পায়নি। স্বামী সুমন হোসেনের দাবি তাদের ঘরের বৈদ্যুতিক ফ্যানে প্রচন্ড শব্দের কারণে স্ত্রী ঘরের আড়ায় ঝুলে গ্যাংড়ানি দিলেও তিনি শনিবার ভোরের দিকে টের পেয়ে স্ত্রীকে জীবিত
অবস্থায় উদ্ধার করে হাটাহাটি করানোর এক পর্যায়ে মৃত্যু কোলে ঢুলে পড়ে। কিন্তু তার এ বক্তব্য অনেকের কাছেই সন্দেহজনক মনে হলেও গৃহবধু মিষ্টির বাবা-মায়ের দাবি তাদের কন্যা রোগের যন্ত্রনা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে।
রা
য়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কখনও কোন ঝগড়া-ঝাটি হয়েছে,এমন কোন খবর আমি গ্রামের সন্তান হিসাবেও জানতে পারিনি।যতটুকু জানিতারা নি:সন্তান হলেও তাদের মধ্যে অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক ছিল। তবে মিষ্টি খাতুন ইদানিং নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দিন দিন জটিল অবস্থায় যেতে থাকে।
ফলে পরিবারের দাবি সে কারণেই সে আত্মহত্যা করতে পারে। জীবননগর থানা পুলিশ নিহত গৃহবধুর স্বামী সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে রেখেছেন।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,গৃহবধুর স্বামীর প্রতি প্রথমদিকে সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের
জন্য থানা হেফাজতে নেয়া হয়। তবে এখনও পর্যন্ত তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। লাশ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়না তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।