জীবননগর সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়ীয়া সড়কে গণডাকাতি ৪ জন আহত স্বর্ণালংকারসহ লক্ষাধিক টাকা লুট

জীবননগর অফিস:-

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়ীয়া ব্যস্ততম সড়কে আবারও গাছ ও বৈদ্যুতিক পোল ফেলে গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদের হামলায় ৪ জন পথচারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঘটনাটি বৃহস্পতিবার রাতে সংঘটিত হয়েছে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। এদিকে এ সড়কে আবারও গণডাকাতির ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ঘটনার শিকার জীবননগর ‍উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ও আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন বলেন,বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে জীবননগর শহরে দলীয় প্রোগ্রাম শেষে মোটর সাইকেল যোগে আন্দুলবাড়ীয়া বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হই।

জীবননগর থেকে রওনা হওয়ার সময় জীবননগর থানার ওসিকে মোবাইল ফোনে জানায় যে,আমরা আন্দুলবাড়ীয়া-সন্তোষপুর সড়ক দিয়ে বাড়ী যাচ্ছি,পুলিশকে একটু সড়কে থাকতে বলেন।

কিন্তু আমরা আন্দুলবাড়ীয়া-সন্তোষপুর সড়কের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত পুলিশ বক্সের সামনে ডাকাতি হচ্ছে। ডাকাত সদস্যদের হাতে বড় বড় দা ছিল। আমরা ভয়ে রীতিমত আতঙ্কিত। ডাকাতরা অন্যান্য পথচারিদের সাথে আমাকেও পুলিশ বক্সের ভিতর আটকিয়ে রাখে। ডাকাতরা প্রায় ঘন্টাব্যাপী সড়কে পথচারীদের থামিয়ে ডাকাতি করে।

দীর্ঘ সময়ে পুলিশকে ঘটনাস্থলে দেখা না গেলেও পরবর্তীতে গ্রামবাসী ছুটে গেলে ডাকাতরা মাঠের মধ্যে পালিয়ে যায়। পরে ১৫-২০ মিনিট পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ডাকাতদের হামলার শিকার ৪ জন পথচারী রক্তাক্ত জখম হয়।

আহতদের নাম ঠিকানা আমার জানা নেই। শাহিন মুহুরী,শামীমসহ ডাকাতির শিকার অধিকাংশ ব্যক্তির বাড়ীই আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে। আমার নিকট থাকা নগদ ৬ হাজার টাকা ডাকাতরা ছিনিয়ে নেয়। ধারণা করা হচ্ছে ডাকাতরা নগদ লাখ টাকা বেশী ডাকাতি করেছে এবং মহিলাদের নিকট থেকে মোটা অংকের স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়েছে।

জামায়াত নেতা সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন,রাতে যে,পুলিশ বক্সে পুলিশ থাকার কথা ছিল,সেই পুলিশ বক্সে ডাকাতরা বসে পথচারিদের আটকিয়ে ডাকাতি করে। এর চেয়ে আশ্চার্য আর কি হতে পারে। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী আমরা ডাকাতদের কবলে আটকে ছিলাম।

ট্রাক চালক ওয়াহেদ আলী বলেন,ঘটনার সময় আমি ঘটনাস্থলে রাস্তায় ট্রাকসহ পৌছালে আকস্মিক কয়েকজন ডাকাত আমাদের গাড়ী থামিয়ে মারধর শুরু করে।

এই সময় আমার হেলপার রাজুও ডাকাতদের হামলার শিকার হন। আমার নিকট থাকা ট্রাকের ১৫ হাজার টাকা ডাকাতরা ছিনিয়ে নেয়।

মোটর সাইকেল আরোহী আশিকুজ্জামান বলেন,ঘটনাস্থলে আমাকে আটকিয়ে পুলিশ বক্সের ভিতরে রেখে দেয়। আমি বৃহস্পতিবার রাতে শিয়ালমারী হাট থেকে ফিরছিলাম।

আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর্জা হাকিবুর রহমান লিটন বলেন,ঘটনার কথা শুনেছি। আন্দুলবাড়ীয়া-সন্তোষপুর সড়কটি রাতে পথচারিদের জন্য আতঙ্কের।

কারণ এ সড়কে প্রায়ই ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকে। বৃহস্পতিবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে শুনছি। তবে কতজন ডাকাতির শিকার হয়েছেন তা বলা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ খন্দকার গোলাম মওলা ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার সাথে জড়িত ডাকাতদের গ্রেফতারের আশ্বাস প্রদান করেন।

এদিকে পৌর শহরে শেষ সীমান্তে বাঁকা ব্রিকস ফিল্ড নামক স্থানে অজ্ঞাতনামা দূর্বৃত্তরা ‘মেসার্স রাজিব ট্রেডার্স’ নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বৃহস্পতিবার রাতে প্রবেশ করে সেখানে মালামাল চুরি করতে ব্যর্থ হলেও দেড় লক্ষাধিক টাকার বিদেশী কবুতর ‍চুরি করে নিয়ে গেছে।

জীবননগর বাজারের বিশিষ্ট রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী রাজিব ট্রেডার্সের মালিক রাজিব হোসেন বলেন,আমার গোডাউন বাঁকা ব্রিকস ফিল্ডের নিকট অবস্থিত। অজ্ঞাত চোরেরা গোডাউন থেকে সিমেন্ট,পাইপসহ অন্যান্য মালামাল নিতে না পেরে তারা গোডাউনের ছাঁদে থাকা বিদেশী কবুতরগুলো চুরি করে নিয়ে যায়।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বলেন,ঘটনা শোনা মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পৌছায় এবং তাৎক্ষণিক ভাবে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। ঘটনার ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *