জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদহ ইউনিয়নের কন্দর্পপুর গ্রামে জামে মসজিদের ইমাম থাকা না থাকা নিয়ে গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনাটি শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে।
জীবননগর উপজেলার হাসাদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন,কন্দর্পপুর গ্রামের মসজিদ সব সময় আমরা রাজনীতির উর্ধ্বে রেখে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার চেষ্টা করে আসছি।
কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ আগে মসজিদের ইমাম মাও.সাইদুর রহমান হঠাৎ করেই সমবেত মুসল্লীদেরকে এলান দেন যে,হাসাদহ বাজারে জামায়াতে ইসলামীর একটি মিটিং আছে,যেখানে জেলা আমীর অ্যাড.রুহুল আমিন সাহেব উপস্থিত থাকবেন।
আপনারা সকলেই ওই মিটিংয়ে যাবেন। এ সময় আমি তাকে বলি একটি রাজনৈতিক দলের মিটিংয়ের ব্যাপারে মসজিদে আগত মুসল্লিদের মাইকে এ ভাবে বলা ঠিক হবে না। তখন তিনি আমার কথার জবাবে বলেন,আপনার দলের মিটিংয়েও বলা হবে।
আমি বলি সেটার প্রয়োজন হবে না। এ ঘটনার পর উক্ত ইমাম সাহেব মাঝখানে জুম্মায় তিনি না এসে অন্যকে পাঠান। পরবর্তীতে আবার তিনি গত শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়াতে আসেন এবং হঠাৎ করেই বলেন আমি মসজিদের ইমাম পদ থেকে পদত্যাগ করছি। আমি তাকে বলি হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমরা যারা মসজিদ কমিটিতে আছি,তাদেরকে একটু আগে বলার প্রয়োজন ছিল।
পরে নামাজ শেষে আমরা সবাই যার যার মত মসজিদের সামনে ফাঁকা স্থানে থাকা কালে হঠাৎ করেই আমার গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মিলনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আমাকে ও আমার ভাই ও আমার সন্তানদেরকে মারপিট করে জখম করে।
তারা নিজেদেরকে জামায়াতে ইসলামীর লোক হিসাবে পরিচয় দিয়ে শক্তির মহড়া দিয়ে ইমাম সাহেবকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করতে চাচ্ছে এবং জামায়াতে লোক হিসাবে শক্তির মহড়া দিয়ে গ্রামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। আমরা ঘটনার ব্যাপারে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এদিকে মিলন হোসেন বলেন,আমি জামায়াতে ইসলামী-বিএনপি বুঝি না। আমরা গ্রামে শান্তি চাই। আমরা আসলে আব্দুস সালাম কিংবা তাদের কারো ওপর হামলা করিনি।
আমার দোষ আমি শুক্রবার সমবেত মুসল্লিদের নিকট জানতে চাই বর্তমান ইমাম সাহেব থাকবে না থাকবে না। এতে আব্দুস সালাম আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সাথে অহেতুক বিরোধে জড়িয়ে পড়ে।
পরে তাদের লোকজন আমার ওপর হামলা চালায়। আমাকে ঠেকাতে গিয়ে আমাদের লোকজন আহত হয়। পরে তারা আমার বাড়ীতে হামলা চালিয়েছে। তাদের কারণে গ্রামে বিশৃঙ্খলা আশঙ্কা রয়েছে। আমি বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। ঘটনার ব্যাপারে আমরাও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে কন্দর্পপুর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মাও.ইসরাইল হোসেন বলেন,ইমাম সাহেব নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির কারণে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। মিলন হোসেন একটু বেশী আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। আব্দুস সালাম ও মারুফ চিকিৎসা বাড়ীতে ফিরে এসেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত আছে। ঘটনাটি আসলে দলীয় কোন বিষয় নয়। আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে স্থানীয় ভাবে বসে আপস নিস্পত্তির চেষ্টা করছি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বলেন,ঘটনার ব্যাপারে উভয়পক্ষই পৃথক লিখিত অভিযোগ থানায় দিয়েছে। ঘটনার পরপরই তাৎক্ষণিক ভাবে পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। আর লিখিত অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আতিয়ার রহমান