জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার রায়পুর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে সুমন হোসেন(২৬) নামের এক পুলিশ কনস্টেবল পালিয়ে যাওয়ার ৬ দিনের মাথায় পুলিশ সদস্যের পরিবারের সদস্যরা ছাত্রীকে থানায় হাজির করেন।
এদিকে স্কুল ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ পুলিশ ঘটনার ব্যাপারে মামলা নিতে গড়িমসি করার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অভিযুক্ত কনস্টেবল সুমন হোসেনের বাড়ীতে স্ত্রী থাকা সত্বেও রায়পুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ফুঁসলিয়ে ওই স্কুল ছাত্রীর সাথে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তোলে।
উপজেলার রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী রমা রানীর(ছদ্মনাম) পিতা বলেন, যশোর সদর উপজেলার জগতনাথপুর গ্রামের ইউনুস খানের ছেলে সুমন হোসেন পুলিশ কনস্টেবল হিসাবে রায়পুর পুলিশ ফাঁড়িতে চাকুরি করা কালে আমার স্কুল পড়ুয়া কন্যার সাথে প্রেম ভালবাসা সম্পর্ক স্থাপন করে।
সুমন হোসেনর বাড়ীতে স্ত্রী রয়েছে। তারপরও আমার মেয়ের কাছে বলে তার বিয়ে হয়নি। ঘটনাটি আমরা জানতে পেরে কনস্টেবল সুমন হোসেন বার বার সতর্ক করি। কিন্তু তারপরও সে আমার নাবালিকা মেয়েকে নানা ভাবে ফুঁসলাতে থাকে।
শেষ পর্যন্ত ঘটনার ব্যাপারে জীবননগর থানায় ওসি সাহেবের নিকট অভিযোগ করি। ঘটনার ১০-১২ দিন আগে তাকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইনে বদলি করে। সেখান থেকে আবার জামজামি পুলিশ ফাঁড়িতে বদলি হয়। কয়েক দিন আগে তার র্যাব এ বদলি করা হয়।
কিন্তু সে র্যাবে যোগদান না করে আমার মেয়েকে সোমবার সকাল ১০ টার দিকে রাস্তা থেকে ফুঁসলিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনার পর আমরা গোপনে বিষয়টি নিস্পত্তির চেষ্টা করি। কিন্তু পুলিশ কনস্টেবল সুমনের বাড়ীতেও তাকে কোন হদিস পাওয়া যায় না। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই ঘটনার ৫ দিন পর মামলা দিতে হয়েছে।
কিন্তু পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। আমার মেয়েকে কনস্টেবল সুমনের লোকজন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে থানায় হাজির করলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টা আমাকেই মেয়ে বাড়ী নেয়ার জন্য বলতে থাকে। পরে বলে মামলা হবে। আমার মেয়েকে থানা রেখে দিয়েছে। শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় নিবে বলে জানিয়েছেন।
রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শরিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ঘটনার ব্যাপারে ছাত্রীর বাবা মামলা দিলেও পুলিশ তা রেকর্ড করতে গড়িমসি করে এবং বিষয়টি সমাঝোতার পক্ষে কথা বলেন।
আমরা পুলিশের নিকট থেকে এমনটা আশা করিনি। থানায় সারাদিন ধর্ণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত শুক্রবার দুপুরের দিকে মামলা হবে বলে ওসি সাহেব আমাদেরকে জানান।
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সুমন হোসেন খানের ঘটনার ব্যাপারে তার মন্তব্য জানার জন্য মোবাইল ফোন নং-০১৮৮৯-৬৫৭১২৩ এ বার বার যোগাযোগ করেও সংযোগ না পাওয়ায় তার মন্তব্য জানা সম্ভ হয়নি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ জাবিদ হাসান বলেন,স্কুল ছাত্রীকে বৃহস্পতিবার রাতেই উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে মামলাও নেয়া হয়েছে। কৌশলগত কারণে মামলা নিতে একটু দেরি হয়েছে। শনিবার সকালে উদ্ধার হওয়া ছাত্রীকে আাদালতে হাজির করা হবে এবং ডাক্তারি পরিক্ষা সম্পন্ন করা হবে।