আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:-
থেমে নেই মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক কারবার। প্রকাশ্যে মদ,গাঁজা, কিনতে পাওয়া গেলেও ইয়াবা ও ফেন্সিডিল পেতে ব্যবহার হচ্ছে মুঠো ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ,মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করে অভিনব কৌশল অবলম্বন করে দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ মাদকের কারবার।
এমন তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক উপজেলা প্রশাসন ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে এক মাদক বিরোধী সেমিনারে অতিথিদের উম্মুক্ত আলোচনায়।
বর্তমানে প্রশাসনের কর্মকাণ্ড ও তৎপরতা কিছু টা শিথিল থাকার কারণে বেড়েছে মাদক কারবারি।প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছে তারা।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর এলাকাসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় মরণঘাতি মাদক, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজা, বাংলা মদ ও দেশি তৈরি চোলাই মদ। শহরে, গ্রাম গঞ্জে সহজে মাদক পাওয়ার কারণে মাদক কারবার ও সেবনে জড়িয়ে পড়ছে কোমলমতি স্কুল, কলেজ গামি শিক্ষার্থী, যুবক সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
এ অঞ্চলে মাদক সেবন ও কারবারের সাথে জড়িত রয়েছে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীও।
এই মাদক হাত বাড়ালেই খুব সহজে পাওয়ার কারণ কোটচাঁদপুর উপজেলার পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা গুলো সব সিমান্তবর্তী এলাকা।
যেমন চৌগাছা, পুড়পাড়া,মহেশপুর, জীবননগর, দর্শনা,চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর এলাকার একাধিক ব্যক্তি সিন্ডিকেট তৈরি করে ভারত থেকে অবৈধ মাদক আনা-নেওয়ার কারবারে জড়িত।
যার কারণে কোন ভাবেই মাদক নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা গোয়েন্দা শাখা, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বিজিবি, স্থানীয় থানা পুলিশ বিভিন্ন সময় পাইকারি
ও খুচরা মাদক কারবারিদের মাদক সহ আটক করে কারাগারে পাঠালেও বন্ধ হয় না ব্যবসা কারণ সেই সময় তাদের ব্যাবসা নিয়ন্ত্রণ করে বাইরে থাকা সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যরা।
কিছু দিন পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে বাইরে এসে আবার শুরু করে কারবার। আবার বিগত ২০১৬-২০১৮ সালের সময় মাদক কারবারির সাথে জড়িত না থেকেও মাদক মামলায় কারাগারে যেতে হয়েছে অনেকের।
রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিহিংসা শিকার হয়ে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও এলাকার কথিত সোর্সদের যোগ সাজসে ধরে এনে মাদকসহ আটক দেখিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের মাদক মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে যা থেকে বাদ পড়েনি সাংবাদিকও।
ও সময় কোন জবাবদিহিতা ছিলো না যার যা খুশি সে তাই করেছে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে প্রশাসনের রদবদল হলে সচ্ছতা ফিরে আসে। শুরু হয় জবাবদিহিতা।
ওই সময় যারা প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাগারে গিয়েছে তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। পরর্বতীতে আর যেতে হয়নি মিথ্যা মামলায় কারাগারে।
তবে যারা প্রকৃত মাদক কারবারি মাদকসহ আটক হয়ে কারাগারে গিয়েছিলো তারা জামিনে
মুক্তি পেয়ে বাইরে এসে আবারো মাদক কারবারে জড়িয়ে একাধিক বার মাদকসহ আটক হয়েছে প্রশাসনের কাছে।
তারা আজও বন্ধ করেনি মাদক কারবার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কারসাজি করে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক কারবার। যার কারণে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে যুব সমাজ।
অবনতি হচ্ছে আইন শৃঙ্খলা। এর কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি,ছিনতাই,ডাকাতিসহ নানাবিধ অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড। এসব বন্দের জন্য কর্তাব্যক্তিদের আসু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সচেতন মহল ।
কোটচাঁদপুর পৌর শহরে স্থায়ী ভাবে টিএনটি অফিস সংলগ্ন ও আবাসিক প্রকৌশলীর সামনে ঋষি পাড়ায় বিক্রি করা হয় দেশি তৈরি চোলাই মদ ও গাঁজা।
আর ভ্রাম্যমান ভাবে মোবাইল ফোন যোগাযোগ করে পৌর এলাকায় হোম ডেলিভারি সহ বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়, ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজা।
এসব মাদক কারবারিদের বিভিন্ন সময় পৌর এলাকায় দেখা মেলে কলেজ স্টান্ড কারিগর পাড়া,বড়বামনদাহ,পুরাতন পশু হাটে,হাসপাতাল মোড়ে, বলুহর বাসস্ট্যান্ড
রেল স্টেশন,ফুলবাড়ি রেলগেট,দুধসারা স্টান্ড, সলেমানপুর, পালপাড়া এলাকায়।
উপজেলার সাফদারপুর, তালসার, ফাজিলপুর, গুড়পাড়া, বলাবাড়িয়া,পাশপাতিলা, কাগমারী, জালালপুর সহ বিভিন্ন এলাকায়।
ভ্রাম্যমান মাদক কারবারির সাথে মাদক সেবিদের সরাসরি দেখা বা হাতে হাতে মাদক লেনদেন করে না। মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে চাহিদা
পরিমাণ মাদকের টাকা বিকাশ / নগদে প্যামেন্ট করার পর একটি নিদিষ্ট স্থানে মাদক রেখে ফোনে জানিয়ে দেয় কোন জায়গা থেকে নিতে হবে।
একান্ত ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকলে মাদক কারবারির অবস্থান জানা ও সরাসরি লেনদেন করা সম্ভব বলে জানান নাম প্রকাশ না করার সর্তে একাধিক মাদক সেবী।
মাদক ব্যবসা বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছে সুধি সমাজ ও সচেতন মহল।