আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:
চিরকুট লিখে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রোগী ভাগিয়ে পাঠান ক্লিনিকে। এরপর ওই রোগীর আল্ট্রাসনোগ্রাম করেন নিজেই।
এমন অভিযোগ উঠেছে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সুমাইয়ার বিরুদ্ধে।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি রোগী ভাগানোর ব্যানিজ্য করলেও দেখার কেউ নাই।
প্রমান পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বললেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আমান উল্লাহ।
জানা যায়,কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সুমাইয়া খাতুন।
তিনি ওই কমপ্লেক্সের ১০৮ নম্বর কক্ষে রোগী দেখে থাকেন। এরপর তাদের হাতে চিরকুট লিখে দেন।
যাতে লেখা থাকে ডা. সুমাইয়া খাতুন আর তাঁর মোবাইল নাম্বার, বলেন ক্লিনিকে যেতে। রোগীরা অনেকে বাধ্য হয়ে ওনার পছন্দের ক্লীনিকে গিয়ে পরীক্ষা করান। আবার অনেকে প্রতিবাদ করে অন্য ক্লীনিকে যান।
এ সব বিষয় নিয়ে বেশ কয়েক বার ওনার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক, জাতীয় সহ অনেক অনলাইন পোটালে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তবে অদৃশ্য কারণে কোন বারই শক্ত কোন পদক্ষেপ নেননি সংশ্লিষ্টরা। এ কারনে সংবাদ প্রকাশের পর কিছু দিন তাঁর কার্যক্রম বন্ধ রাখেন।পরে আবারও তিনি ফিরে যান স্বরুপে।
সম্প্রতি তিনি শাহিন ও মানিকের স্ত্রী সহ একাধিক রোগীর হাতে ধরিয়ে দেন চিরকুট। বলেন তাঁর পছন্দের ক্লিনিকে যেতে।
তারা তাঁর পছন্দের ক্লিনিকে না গিয়ে প্রতিবাদ জানান।
তাদেরই একজন কোটচাঁদপুরের পাঁচলিয়া গ্রামের মানিক হোসেন। তিনি বলেন, গেল এক সপ্তাহ আগে আমার স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলাম হাসপাতালে।
এরপর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০৮ নাম্বার ঘরে বসা সুমাইয়া খাতুন দেখানো হয়। তিনি রোগী দেখে কয়েকটি পরিক্ষা নিরিক্ষা লিখে দেন কাগজে।
এরপর আল্ট্রভিশন ক্লিনিকে যেতে বলেন। বলেন ওখানে পরিক্ষা ভাল হয়। তিনি বলেন,আমি কাগজ নিয়ে ওখানে যায়নি। কারন সব কাজ আমি জনির নিউ লাইফ থেকে করিয়ে থাকি।
অন্যজন হরিণদীয়া মাদ্রাসা পাড়ার তানজিলা খাতুনের স্বামী শাহিন বলেন,হাসপাতালে গিয়ে ছিলাম আমার স্ত্রীকে গাইনি ডাক্তার দেখানোর জন্য।
একজন বললো ১০৮ নাম্বারে গাইনি ডাক্তার সুমাইয়া রোগী দেখেন। এরপর ওনাকে দিয়ে আমার স্ত্রীকে দেখায়।
তিনি রোগী দেখে একটি চিরকুট লিখে সজিব ল্যাবে যেতে বলেন। বলেন ওখানে যান আমি নিজেই আল্ট্রাসনোগ্রাম গিয়ে করে দিবো।
আর দামও একটু কম রাখার কথা বলেন তিনি। এরপর আমি সজিব ল্যাবে যায়। ওখানে গিয়ে দামে না হওয়ায় পরে নিউ লাইফ থেকে পরিক্ষা করিয়েছি।
এ ব্যাপারে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সুমাইয়া খাতুন বলেন,আমি কালীগঞ্জ থেকে আল্ট্রাসনোগ্রামের উপর কোর্স করেছি।
সে অনুযায়ী বোর্ড আমাকে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। তাহলে তো আমি আল্ট্রসনোগ্রাম করতেই পারি।
তিনি বলেন,আমাদের হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশনটি নস্ট। আর রোগীর চিকিৎসা দিতে গেলে তো পরিক্ষা করানো লাগে।এ কারনে পরীক্ষা দিয়ে থাকি।
তবে আমার কাছ আল্ট্রসনোগ্রাম করার জন্য আমি কারোর জোর করি না। আমার যদি কারোর পছন্দ হয়,সে আমাকে দিয়ে করান। না হলে না করান।
কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আমান উল্লাহ বলেন,বিষয়টি আপনারা আমাকে জানালেন,আমি নাম লিখে রাখছি। এমন কোন প্রমান পেলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।