মাহফুজুর রহমান,কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ):-
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গীতে রাস্তার ইট তুলে সেই ইট দিয়ে প্রাচীর নির্মান করেছেন সড়কের প্রবেশ পথে ।এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার ২০ পরিবারের মানুষ।
রাস্তা বন্ধ করার এমন অভিযোগ উঠেছে কোটচাঁদপুর উপজেলা এলাঙ্গী ইউনিয়নের জগদীশপুর গ্রামের সুকেশ হালদারের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি),
মডেল থানা, বিআরডিবি অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী গোলাপ হালদার।
ভুক্তভোগী গোপাল হালদার বলেন, ইউনিয়নের জগদীশপুর হালদার পাড়া। ঐ পাড়ায় বসবাস করেন ২০টি পরিবার।
যাদের চলাচলের কোন রাস্তা ছিল না তাই মানুষের বাড়ির উপর দিয়ে চলাচল করতেন।এরপর অনেক জায়গায় ঘোরাঘুরি করে গত ২০২৩ সালে ৭ জুন ইউনিয়ন পরিষদের অংশীদারিত্বমূলক পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প-৩ (২য় সংশোধিত) বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) কোটচাঁদপুরের অধীনে ওই ২০ পরিবারের চলাচলের রাস্তা নির্মিত হয়।
যে রাস্তাটি গেছে জগদিশপুর গ্রামের সুবলের বাড়ির উত্তর পাশ দিয়ে আমার বাড়ি পর্যন্ত। সে থেকে ঐ রাস্তাটি দিয়ে আমরা নির্বিঘ্নে চলাচল করে আসছিলাম।
বিষয়টি নিয়ে চলতি বছরের ১৮ নভেম্বর সুবল হালদার বাদী হয়ে ১৪৪ ধারা ও ১৪৪/১৪৫ ধারায় ঝিনাইদহ বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দু’টি মোকাদ্দামা দায়ের করেন।
এ সব করেই চুপ থাকেননি সুবল হালদার। গত ০৯/১২/২০২৪ ইং তারিখের মধ্যরাতে চলাচলের রাস্তার ইট তুলে নিয়ে যায় সুকেশ, সুবল সহ তাঁর সহযোগীরা।
আর কিছু ইট রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যান । দেওয়াল তৈরি করেছেন চলাচলের রাস্তায়। বিষয়টি মিমাংসার জন্য স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ দু’বার শালিসে বসাবসির পরেও কোনো লাভ হয়নি।
এ কারণে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের মানুষেরা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে সুকেশ হালদার বলেন, গোপাল হালদার আওয়ামী লীগ করেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মিজানর রহমানের সঙ্গে তাঁর ছিল সখ্যতা।
সে সুবাদে তিনি ওই সময় চেয়ারম্যানকে দিয়ে জোরপূর্বক এ রাস্তা নির্মাণ করেন। রাস্তার ইট তুলে কারা দেওয়াল নির্মান করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মোবাইলে না বলে এ বিষয়ে আপনার সাথে সাক্ষাতে কথা বলব।
সুকেশের ছেলে সোহাগ কুমার বলেন, ইট আমরা তুলিনি, তুলেছে বিএনপির ছেলেরা । নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক মানুষ অভিযোগ করেন, সুকেশ হালদার টাকাওয়ালা লোক, টাকার বিনিময়ে সব করছে ।
তারাই রাস্তার ইট তুলেছেন। আবার ওই ইট দিয়ে তাদের চলাচলের রাস্তায় দেওয়াল নির্মান করেছেন।
কারন এতে সুবিধা ভোগ করছেন তৃতীয় পক্ষ আর দূর্ভোগ প্রহাতে হচ্ছে নিজেদের। কারণ হিসেবে তারা বলেন, সুকেশ হালদার ও গোপাল হালদার সম্পর্কে মামা – ভাগ্নে। সে সময় তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল।
এ কারনে রাস্তা হয়েছিল। এখন কি ঘটেছে আমাদের জানা নাই। তবে রাস্তা বন্ধ রয়েছে এটা দেখেছি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়া বলেন, এ সংক্রান্ত একটি আবেদন পেয়েছি। তবে এটা কোন সরকারি রাস্তা না। সরকারি রাস্তা হলে আমাদের অফিস থেকে ব্যবস্থা নিতে পারতাম। তারপর ও আমি আবেদনটি নিয়েছি।
তিনি বলেন, যেহেতু রাস্তাটি নির্মাণ করেছেন বিআরডিবি বিভাগ। সেহেতু এ বিষয়টি ওনারা দেখবেন। উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোছাঃ শায়লা শারমিন বলেন, একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
ওই প্রকল্পটা দেখাশোনা করেন মুনসুর সাহেব উনাকে নির্দেশ দিয়েছি ব্যবস্থা গ্রহণ করার। সেই সময় সবার সম্মতি ক্রমেই রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল। যে ইট গুলো উঠিয়ে ফেলেছে সে অন্যায় করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।