জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে জমি জায়গার বিরোধকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট মামলার ঘটনায় প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রান্তিক কৃষকের বাড়ীতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাবে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। ঘটনাটি বুধবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় জীবননগর থানায় মামলা করা হয়েছে।
জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুস সালাম বলেন,জমি জায়গার বিরোধ কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে একের পর এক মামলা করেছে। সম্প্রতি আমরা একটি মামলা আদালতে করি।এতে প্রতিপক্ষরা আমাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
বুধবার সকাল ৭ টার সময় শীতের বাড়ীর সবাই কাঁথা-কাপড়ের মধ্যে শুয়ে। এই অবস্থায় আমাদের গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে মনির হোসেন,ইমরান হোসেন,এনামুল হক,শরিফুল ইসলাম,ইসমাইল হোসেনের ছেলে আকরাম,আকরাম হোসেনের ছেলে ইকবাল হোসেন,ইকলাস হোসেন,ইমদাদ হোসেন,
আব্দুল জব্বারের ছেলে কোরবান হোসেন,কোরবান হোসেনের ছেলে জীবন হোসেন,আফাজ উদ্দিনের ছেলে জহির উদ্দিন,হাবিবুল,মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে সরোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন,মৃত কিয়াম উদ্দিনের লিয়াকত হোসেন,শওকত আলী,
হযরত আলী,সাইফুল ইসলাম,আব্দুর রহমানের ছেলে সাদেক হোসেন,সাব্বির হোসেনসহ অজ্ঞাত আরো ১৫-২০ জন হাতে লাঠিসোটা,লোহার রড,শাবল,দা,হাসুয়া নিয়ে আমার পিতার বাড়ীতে প্রবেশ করে।
বাড়ীর লোকজন কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলা চালিয়ে ব্যাপক হারে ভাংচুর শুরু করে। তারা বাড়ীর সমস্ত আসবাবপত্র,ফ্রিজ,দুইটি পাখিভ্যান,শ্যালো মেশিন,টিভি ইত্যাদি ভাংচুর
করে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। ঘরে থাকা ৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। তারা আমার পিতার বাড়ী ভাংচুর লুটপাটের পর আমার বাড়ীতে হামলা চালিয়ে একই ভাবে ভাংচুর করে প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
আমার মা আনোয়ারা বেগম কাকুতি মিনতি করে হামলাকারীদের বাঁধা দিলে আকরাম হোসেন আমার মায়ের মাথায় কোপ দিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় আমার ছোট ভাই আবুল কালামের মাথায় মনির হোসেন কোপ দিয়া মারাত্মক গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। আমার বৃদ্ধা বাবা শহিদুলকেও বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে।
মনির হোসেনের নেতৃত্বে তারা আমাদের বাড়ী ঘরে হামলা চালায়। হামলাকারিরা সকলেই জামায়াতে ইসলামী কর্মি-সমর্থক। মনিরের অত্যাচারে আমরা রীতিমত অতিষ্ঠ।
অভিযুক্ত মনির হোসেন বলেন,ঘটনার সময় আমি ফজরের নামাজ শেষে পার্শ্ববর্তী চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ সালামের বাবা শহিদুলের বাড়ীর সামনে ৪০-৫০ মানুষ বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করে। তাদেরকে আমি প্রতিহত করার চেষ্টা করি।
কিন্তু আমার পক্ষে শেষ পর্যন্ত তাদের থামানো সম্ভব হয়নি। আমার বিরুদ্ধে যে,অভিযোগ করা হচ্ছে তা প্রতিহিংসা পরায়ন হয়েই করা হচ্ছে। তারা সব ঘটনায় আমাকে আসামি করে কিংবা করার চেষ্টা করে থাকে।
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার মফিজুল ইসলাম মাফি বলেন,উভয়পক্ষের মধ্যে ১৫-২০ বছর ধরে জমি জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধের কারণে প্রায়ই তাদের মধ্যে কোন না কোন ঘটনা ঘটেই থাকে।
উভয়পক্ষ নিকটতম আত্মীয়-স্বজন। একই ভাবে বুধবার সকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন,ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্ত শেষে চুড়ান্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক আছে বলে জানি।