প্রস্তাবিত জীবননগর দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দর পরিদর্শন যুগ্ম সচিব মনিরুজ্জামান

জীবননগর অফিস:
একের পর এক মন্ত্রী,এমপি,সচিবরা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার প্রস্তাবিত দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দর পরিদর্শন করলেও এখনও পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি বন্দরটি।

আদৌ  স্থলবন্দরের কার্য্ক্রম চালু হবে কি না সে প্রশ্নের উত্তর
না দিয়েই চলেন গেলেন স্থলবন্দরটির সর্বশেষ পরিদর্শন কর্মকর্তা যুগ্ম-সচিব মনিরুজ্জামান।

রোববার  সকাল সাড়ে ১১ টার সময় সরকারি গেজেটভূক্ত জীবননগর উপজেলার প্রস্তাবিত দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া

স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম- সচিব মুন্সী মোঃ মনিরুজ্জামান।

প্রস্তাবিত  দৌলৎগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দর  পরিদর্শন কালে  স্থানীয় সাংবাদিকরা স্থলবন্দরের কার্য্ক্রম বিষয় জানতে চাইলে তিনি  সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই  সেখান থেকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যান।

স্থানীয় একাধীক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন,এই বন্দর হবে কি না সেটা আমরা কেউ জানিনা । তবে এখানে একটি চক্র বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন দপ্তরের বড় বড় কর্মকর্তাদের নিয়ে স্থলবন্দর পরিদর্শনের জন্য নিয়ে আসেন।

যখন কোন কর্মকর্তা স্থলবন্দরটি পরিদর্শনের আসেন আর অমনি কয়েকি দিনের মধ্যে এলাকার জমি দাম কয়েকগুন বেড়ে যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন ভাবে স্থলবন্দরকে ঘিরে নানা
ভাবে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনা করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ থেকে জানা যায়,একটি চক্র প্রস্তাবিত স্থল বন্দর এই চালু হলো,চালু হলো বলে এলাকাবাসীকে মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে আসছেন। তারা স্থলবন্দরকে ঘিরে এক ধরণের
বাণিজ্যে নেমেছে। বার বার বার বন্দর চালুর কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

সীমান্তবর্তী অনেক মানুষের দাবী আমাদের এখানে বন্দর চালুর খবর মাঝে মাঝে শোনা গেলেও ভারতের মানুষ এ ব্যাপারে কিছুই জানে না।

অন্যদিকে ভারতীয় সীমান্তে রাস্তাঘাটেরও তেমন কোন উন্নয়ন তাদের চোখে পড়েনি। যখনই সরকারী কোন কর্মকর্তা স্থলবন্দরটি পরিদর্শনের আসেন তখন এলাকায় একটি সাজ সাজ রব ওঠে কয়েক দিনের মধ্যেই বন্দর চালু হচ্ছে।

আর একথা তারা যুগের পর যুগ ধরে শুনেই আসছেন। এলাকার মানুষের মধ্যে বন্দর চালুর ব্যাপারটি এক ধরণের
আলো-আধারী ঘটনা।

জীবননগর প্রস্তাবিত দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত দৌলতগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দরটি শুল্ক স্টেশন হিসাবে চালু ছিল।

কিন্তু ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় শুল্ক স্টেশনটির কার্য্ক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে বাংলাদেশ সরকারের জাতীয়
রাজস্ব বোর্ড ১৯৭২ সালে শুল্ক স্টেশনটি ফের চালুর নির্দেশ দেয়।

পরবর্তীতে আবারও স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালের ১৫ জুলাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আবার শুল্ক স্টেশনটি চালুর প্রজ্ঞাপন জারি করে বন্দরটিতে ১৯টি পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়।

পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ১১ জুন আরেকটি প্রজ্ঞাপনে
শুল্ক স্টেশন কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে নির্দেশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। সেটাও আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সুত্রে জানা যায়, দৌলতগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দর সড়ক যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত সব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে।

বন্দরটি থেকে ভারতের জাতীয় সড়কের দূরত্ব ৩৪ কিলোমিটার। ঢাকার সাথে দূরত্ব ২৪০ কিলোমিটার। তা ছাড়া ভারতীয় অংশে জাতীয় মহাসড়ক থেকে সব স্থানে যাতায়াত করা সম্ভব।

জাতীয় সড়ক থেকে দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের যে,দূরত্ব, তার থেকে অনেক কম দূরত্ব অর্থাৎ ২৫ কিলোমিটার কম রাস্তা দৌলতগঞ্জ-মাজদিয়া স্থলবন্দর।

যার কারণে ভারতের সাথে দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের চেয়ে দ্রুত সময়ে পণ্য আমদানি এবং রপ্তানি ও পরিবহন খরচ অনেকাংশে সাশ্রয়ী হবে।

রোববার সকাল সাড়ে ১১ টার সময় সর্বশেষ জীবননগরে প্রস্তাবিত দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দর পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন,চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোঃ জহিরুল ইসলাম,জীবননগর  উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ
আলামিন।

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন,জীবননগর উপজেলা  বিএনপির সাধারণ  সম্পাদক  শাজাহান আলী, জীবননগর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী সাখাওয়াত হোসেন,

সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবদল নেতা ময়েন উদ্দিন মঈনসহ উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ,সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *