জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কয়া গ্রামের এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে কৌশলে জমি রেজিষ্ট্রি করে নিয়ে জমির মালিক প্রান্তিক কৃষককে টাকা না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে প্রান্তিক কৃষক জমি বিক্রির টাকা না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এবং টাকা উদ্ধারের জন্য সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
জমির টাকা পরিশোধ না করলেও শিক্ষক অতিরিক্ত আরো দু’কাঠা জমি বেশী রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ বলা হয়েছে।
তিনি এ ঘটনায় ন্যায় বিচারের আশায় জীবননগর থানায় বুধবার সকালে স্কুল শিক্ষক ও তার পিতার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের কয়া মসজিদপাড়ার মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে ওসমান গনি বলেন, আমাদের রবিউল ইসলাম রবি ও তার ছেলে ধান্যখোলা সরকারী
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জহুরুল হক শিমুল আমাকে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে তোমার মাঠের ১২ কাঠা জমি বিক্রি করে দাও।
আমি এক পর্যায়ে জমি বিক্রি করতে রাজি হয়ে যাই। তাদের সাথে আমার মাঠের ১২ কাঠা জমি ১২ লাখ টাকায় বিক্রির
জন্য দাম দর ঠিক হয়। তারা বলে জমি শিমুল হোসের নামে রেজিষ্ট্রি হবে।
সব কথাবার্তা চুড়ান্ত হওয়ার পর তারা আমাকে নিয়ে গত বছরের ১০ নভেম্বর সকালে জীবননগর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে নিয়ে যায়।
সেখানে কাগজপত্র ঠিকঠাক করা শেষে বিকাল ৫ টার দিকে জমি রেজিষ্ট্রি হয়। তারা আমাকে উক্ত ব্যাংকে গিয়ে
পরিশোধ করবে বলে জানায়।
আমি তাদের কথা সরল মনে বিশ্বাস করি। কিন্তু পরে
তারা আমাকে উক্ত টাকা পরিশোধ না করে নানা অজুহাতে কালক্ষেপন করতে থাকে।
এক পর্যায়ে এখন তারা বলছে তুমি আর কোন টাকা পাবে না। আমি তো তাদের কথা শুনে রীতিমত হতবাক হয়ে পড়ি। এদিকে ঘটনার এক পর্যায়ে জানতে পারি তারা আমার
১২ কাঠা জমির জায়গায় ১৪ কাঠা জমি রেজিষ্ট্রি করে নিয়েছে।
একথা শুনে আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি। কিন্তু তারা আমাকে কোন ভাবেই পাত্তা দিচ্ছে না। শিমুলরা গ্রামে প্রভাবশালী হওয়ায় তারা আমাকে টাকা না দিয়ে উল্টা আমাকেই বিপদে ফেলতে হুমকি দিচ্ছে।
ঘটনার ব্যাপারে সর্বশেষ বুধবার সকালে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
স্কুল শিক্ষক জহুরুল হক শিমুল তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,ওসমান গনি আগে আমাদের নিকট যে পরিমান জমি বিক্রি করেছিল,সে্ই পরিমান জমি তার না থাকার কারণে সেই জমি বাবদ ১০ নভেম্বর আমাকে জমি রেজিষ্ট্রি
করে দেয়। তার নিকট থেকে বাড়তি কোন জমি নেয়া হয়নি।
ঘটনার ব্যাপারে জনৈক শাহজামাল বলেন,ঘটনার পর পরই আমরা ওসমান গনির নিকট শুনেছি। কিন্তু তার এ ধরনের বোকামির কারণে তার প্রতি সবাই ক্ষোভ ছাড়ছেন। থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে
এ ব্যাপারে সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন,ঘটনার কথা তো শুনছি। অবাক হচ্ছি যে,টাকা বাদে কেন জমি রেজিষ্ট্রি হলো আর এখন তারাই বা কেন টাকা দিতে চাচ্ছে না। কোথায় যে,ঝামেলা আছে তা
বুঝতে পারছি না।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন,ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে ঘটনাটি আসলে কি ঘটেছে।