জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া খালপাড়ায় প্রবাসীর স্ত্রী নিজের শিশু সন্তানকে স্বামীর ঘরে রেখে রাতের আধারে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে পুরন্দরপুর গ্রামে অপর প্রবাসীর স্ত্রী স্বামী সংসার
থেকে টাকা পয়সা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ দু’টি ঘটনায় দুই প্রবাসীর পরিবার তাদের শিশু সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
ঘটনা দু’টি ব্যাপারে জীবননগর থানায় পৃথক লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া খালপাড়ার প্রান্তিক কৃষক রফিকুল ইসলাম(৫৫) বলেন,আমার ছেলে শিপন হোসেন সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে গত ৬ মাস আগে তার
স্ত্রী ঈশিতা খাতুন ও দুই বছর বয়সের একমাত্র সন্তান ঈশানকে বাড়ীতে রেখে সৌদি আরবে চলে যায়।
আমার পুত্রবধু ঈশিতা খাতুন বাড়ীতে সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করে আসছিল। আমার উক্ত পুত্রবধু ঈশিতা খাতুন প্রতিদিনের মত
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তার নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন ভোর ৫ টার দিকে ফজর নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে জেগে দেখি উক্ত বউমার ঘরের দরজার বাইরে থেকে হুক দেয়া।
এ অবস্থায় আমরা দরজার হুক খুলে দেখি আমার পুত্রের শিশু ছেলে ঘুমিয়ে আছে,কিন্তু বউমা নেই। এ অবস্থা দেখে আমরা তাকে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করতে থাকি।
এক পর্যায়ে জানতে পারি আমার উক্ত বউমা ঈশিতা খাতুন তার নানী বাড়ী অবস্থান করছেন। ঈশিতার বাবা বিদেশে থাকে। এই সুযোগে তার মা অন্য পুরুষের সাথে চলে গিয়ে বিয়ে করে আছে।
এখন তার নানা-নানির বাড়ী যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। এখন শোনা যাচ্ছে ঈশিতাও পরকীয়া সম্পর্ক করেছে। আমার ছেলের সাথে আর সংসার করবে না।
এমন পরিস্থিতিতে আমরা শিশু পুতা ছেলে ইশানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছি। আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর্জা হাকিবুর রহমান লিটন বলেন,ঘটনার কথা আমিলোকমুখে শুনেছি।
কিন্তু ঘটনার ব্যাপারে কেউ আমার নিকট আসেনি। তবে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি আপস নিস্পত্তি করা যেতে পারে।
এদিকে হাসাদহ ইউনিয়নের পুরন্দরপুর গ্রামের বাজারপাড়ার খোরশেদ মন্ডলের ছেলে আব্দুর রহিম(৩১) বলেন,কেডিকে ইউনিয়নের কাশিপুর ফকিরপাড়ার শহিদুল ইসলামের মেয়ে মুন্নি খাতুনকে গত ৪ বছর আগে বিয়ে করি।
বিয়ের পর আমাদের দাম্পত্য জীবনে রাফি(৩) নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আমি সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে ঘটনার তিন মাস আগে কাতারে যাই।
সেখানে অবস্থানের দু’মাসের মাথায় শুনি আমার স্ত্রী মুন্নি খাতুন আমার ঘর থেকে নগদ ৯০ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র নিয়ে তার বাবা-মায়ের বাড়ী কাশিপুরে চলে গেছে এবং আর আমার সংসার করবেন না।
এ কথা শুনে আমি প্রবাসের কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ীতে আসি। আমি দেশে ফিরে স্ত্রীর বাবা-মায়ের বাড়ীতে গেলে আমার স্ত্রী আমার নিকট আমার শিশু সন্তান রাফিকে তুলে দিয়ে বলে তুমি তোমার সন্তানকে নিয়ে চলে যাও,আমি তোমার সাথে সংসার করব না।
এখন আমি শিশু সন্তান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। বহু চেষ্টা করেও স্ত্রীকে আমার বাড়ীতে আনতে ব্যর্থ হয়েছি। আমার
কোন দোষত্রুটিও সে বলছে না,আবার সংসারও করবে না।
এ ব্যাপারে হাসাদহ ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার মঈনুল ইসলাম বলেন,ঘটনাটি অত্যন্ত দু:খজনক। আব্দুর রহিম অত্যন্ত সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ।
তার স্ত্রী সন্তানের কথা শুনে বিদেশ থেকে অল্প সময়ের মধ্যে বাড়ীতে চলে আসে। কোন ভাবেই তার স্ত্রীকে বাড়ীতে নিয়ে আসতে পারিনি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বলেন,ঘটনা দু’টি ব্যাপারে পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।