আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ:-
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম রুবেল হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ৩জন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ, বিপিএম-সেবা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান,
গত ১১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় ঝিনাইদহ জেলার সদর থানাধীন বাদপুকুরিয়া গ্রামের নুরুজ্জামানের পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম রুবেল (৩৩) নিখোঁজ হয়।
পরবর্তীতে গত ১৮ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ৩টায় একটি পরিত্যাক্ত বাড়ির সেফটি ট্যাংকের মধ্য হতে নিখোঁজ রুবেলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হয়।
এই সংক্রান্তে মৃত রফিকুল ইসলাম রুবেলের ভাই আশিকুর রহমান বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণসহ হত্যা করে লাশ গুম সংক্রান্তে মামলা দায়ের করেন। যা ঝিনাইদহ সদর থানার মামলা নং-২২।
ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি ঝিনাইদহ জেলার পুলিশ সুপারের গোচরীভূত হলে
তিনি ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও খুনিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা পুলিশের সাথে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এর একটি চৌকস টিমকে নিয়োজিত করেন।
থানা পুলিশ ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল এর যৌথ প্রচেষ্টায় ঘটনার ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যে অপহরণ, হত্যা ও লাশ গুমের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাদপুকুরিয়া গ্রামের শাহিন মিয়া (৩৮), পিতা-সোলায়মান হক দুলাল, টুটুল মিয়া (১৯), পিতা-শহিদুল মিয়া, সাগর মন্ডল (২১), পিতা-মন্টু মন্ডল কে গ্রেপ্তার করে।
আসামী সাগর আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি প্রদান করেন এবং অপর ২ আসামীকে বিজ্ঞ আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের সহযোগী আসামী একই গ্রামের টগর (৩২), পিতা-ইছাহাকের নাম প্রকাশ করে।
সাইবার ক্রাইম এর এসআই (নিঃ)/মোঃ খালিদ হাসান, বিপিএম-সেবা, এএসআই (নিঃ)/মোঃ ইকলাছুর রহমান ও মামলা তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিঃ)/মোঃ আনিছুর রহমান,
এএসআই (নিঃ)/মোঃ হাফিজুর রহমান সহ সাইবার ক্রাইম ঝিনাইদহের একটি চৌকস টিম নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার বিভিন্ন এলাকায় হত্যা
ও অপহরণের পরিকল্পনাকারী মাস্টারমাইন্ড টগরকে গ্রেপ্তারের জন্য ছদ্দবেশে তাদের অভিযান অব্যাহত রাখে
এবং গত ২৯জানুয়ারি নরসিংদী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ এর সহায়তায় নরসিংদী সদর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলার গুরুত্বপূর্ন আসামী টগরকে গ্রেপ্তার করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি টগরকে ৩০ জানুয়ারি আদালতে সৌপর্দ করলে আসামী লোমহর্ষক অপহরণ ও হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোঃ ইমরান জাকারিয়া জানান আসামীরা সবাই মাদকাশক্ত।
ভিটকিম রুবেল এর পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ নেওয়ার জন্য আসামীরা একত্রে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক রুবেলকে গত ১১জানুয়ারি তারিখ রাতে অপহরণ করে হাত,
পা ও মুখ বেঁধে শাহিনের পরিত্যাক্ত বাড়ির একটি কক্ষে ফেলে রাখে। মুক্তিপণের টাকা দাবির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় আসামীরা সম্মিলিতভাবে
ভিকটিম রুবেলকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য আসামী শাহিনের পরিত্যাক্ত বাড়ির পিছনের সেফটি ট্যাংকের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখে।
আসামীদের প্রদত্ত তথ্য মোতাবেক সাইবার টিম সংশ্লিষ্ট সকল আলামত উদ্ধার করেছে। এখনো মামলাটি তদন্তনাধীন রয়েছে বলেও জানান।