চুয়াডাঙ্গাতে স্বামী ধুমপান করায় স্বামীর উপর অভিমান করে গলায় ফাঁস নিলেন কিশোরী নববধু

গঞ্জের খবর ডেস্ক:-

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বড়বোয়ালিয়া গ্রামে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে মোন্নি খাতুন (১৩) নামে এক কিশোরী নববধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে বাবার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (হারদি হাসপাতাল) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পরদিন রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় নিজ পৈতৃক গ্রামে জানাজা শেষে মুন্নির দাফন সম্পন্ন হয়।

সম্প্রতি বিয়ে, স্বামীর সঙ্গে অভিমান

মুন্নি খাতুন আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাঁংবাড়ীয়া ইউনিয়নের বড়বোয়ালিয়া গ্রামের মো. বুলবুল খাতুনের মেয়ে। এক সপ্তাহ আগে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয় পাশের গাংনী ইউনিয়নের মোচাইনগর গ্রামের ডেকোরেশন মিস্ত্রী নাইম হাসানের সঙ্গে। তবে জানা গেছে, তাদের মধ্যে আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

ঘটনার দিন, মুন্নির চাচাতো দাদি মারা গেলে স্বামী নাইম হাসানকে নিয়ে দেখতে যান তিনি। সেখানে নাইম ধূমপানের জন্য পাশের দোকানে যেতে চাইলে মুন্নি তাকে বাধা দেন এবং আত্মহত্যার হুমকি দেন। স্বামী নিষেধ অমান্য করে দোকানে গেলে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এরপর বিকেলে বাবার বাড়িতে ফিরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মুন্নি।

প্রশাসনের বক্তব্য

ঘটনার পর রাতে পুলিশ মুন্নির মরদেহ উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা থানায় নিয়ে যায় এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

উসমানপুর পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন জানান, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মুন্নির বয়স ১২-১৩ বছর হবে। এটি একটি অপমৃত্যুর ঘটনা। তবে দুই পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

বাল্যবিবাহ ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া

এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একইসঙ্গে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে এক কিশোরীর বিয়ে ও আত্মহত্যা নিয়ে স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আইন অনুসারে, মেয়েদের ন্যূনতম ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে দেওয়া নিষিদ্ধ হলেও বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না, যা একদিকে অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাল্যবিবাহ রোধে প্রশাসনের আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এমন করুণ পরিণতি এড়ানো যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *