আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:-
ঝিনাইদহের সদর উপজেলার হাটগোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পড়ে রয়েছে একটি ঘোড়ার চামড়া, মাথা ও ভুঁড়ি।
রাতের আঁধারে কে বা কারা ঘোড়াটি জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
অন্ধ ঘোড়াটির করুণ পরিণতি
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে হাটগোপালপুর বাজার ও আশপাশের এলাকায় ঘুরে বেড়াত একটি অন্ধ ঘোড়া।
সাধারণত, এটি হাটগোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ঘাস খেয়ে দিন কাটাত। তবে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতের কোনো এক সময়ে দুষ্কৃতকারীরা ঘোড়াটিকে জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে এবং এর চামড়া, মাথা ও ভুঁড়ি মাঠে ফেলে রেখে যায়।
রোববার সকালে স্থানীয়দের নজরে আসে মর্মান্তিক এ ঘটনা। বাজারের এক ব্যবসায়ী রইচ উদ্দিন জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঘোড়াটি এলাকায় ঘুরে বেড়াত। আমরা মাঝেমধ্যে খাবার দিতাম। সকালে এসে দেখি স্কুল মাঠে ঘোড়ার মাথা ও চামড়া পড়ে আছে। এটা খুবই দুঃখজনক।’
মাংস বিক্রির শঙ্কা, জনমনে উদ্বেগ
স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, ঘোড়ার মাংস কোনো মাংসের দোকানে বিক্রির উদ্দেশ্যে নেওয়া হতে পারে। হাটগোপালপুর এলাকার বাসিন্দা মো. রিফাত বলেন, ‘ঘোড়াটি আমাদের কাছে খুব প্রিয় ছিল। আমরা প্রতিদিন খাবার দিতাম, দেখাশোনা করতাম। কিন্তু কেউ কীভাবে এত নিষ্ঠুর হতে পারল? এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক।’
স্বাস্থ্যঝুঁকি ও প্রশাসনের পদক্ষেপ
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘ঘোড়ার মাংস মানুষের খাদ্য হিসেবে উপযোগী নয়। এতে মাত্রাতিরিক্ত অ্যাসিড থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।’
এদিকে, বাজারে যদি ঘোড়ার মাংস বিক্রির চেষ্টা করা হয়, তবে তা পরীক্ষা করা হবে বলে জানান তিনি।
হাটগোপালপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সাত্তার বলেন, ‘কে বা কারা রাতের আঁধারে ঘোড়াটি জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে এমন জঘন্য কাজ আর কেউ করতে সাহস না পায়।