আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মথুরাপুর আদর্শ ইয়াতিমখানার ১৬ বছর বয়সী এতিম কিশোর সাগর হোসেন এখন হাসপাতালের মেঝেতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
ক্রিকেট খেলার স্টাম্প ও লাঠির নির্মম আঘাতে তার সারা শরীরে দগদগে ক্ষত।
ছেলের শরীরের ক্ষতগুলোর ওপর স্নেহের হাত বুলিয়ে দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অসহায় মা মধুমালা খাতুন।
বুধবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য হলে যোগ করুন) ভোরে ইয়াতিমখানার শিক্ষক ইমরান হাওলাদার
অমানবিকভাবে নির্যাতন চালান এই কিশোরের ওপর। শুধু ইফতারের সময় বেঁচে যাওয়া দুটি কমলার টুকরো খাওয়ার অপরাধে তাকে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়।
মধ্যযুগীয় নির্যাতনের চিত্র
স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক ইমরান হাওলাদার নিয়মিতভাবেই ইয়াতিমখানার শিশুদের ওপর নির্যাতন চালাতেন।
কিন্তু এবার তার নিষ্ঠুরতা সীমা ছাড়িয়ে যায়। ফজরের নামাজের পর সাগরকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ক্রিকেট স্টাম্প ও মেহগনি গাছের ডাল দিয়ে পেটাতে থাকেন তিনি।
এই পাশবিক নির্যাতনের ফলে সাগরের সারা শরীরে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। শুধু সাগর নয়, একইসঙ্গে রায়হান উদ্দিন নামের আরেক শিশুকেও মারধর করেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
স্থানীয়রা সাগরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক, বরখাস্ত ও থানায় অভিযোগ
এ ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত শিক্ষক ইমরান হাওলাদার পলাতক রয়েছেন।
ইয়াতিমখানার সুপার জহুরুল ইসলাম জানান, এই অমানবিক ঘটনার পর শিক্ষক ইমরান হাওলাদারকে
বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,
“আমরা অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছি। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
স্বজন ও এলাকাবাসীর প্রতিবাদ
এতিম শিশুর ওপর এমন পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সাগরের মা মধুমালা খাতুন বলেন,
“শুধু দুটি কমলা খাওয়ার জন্য এমন নির্মম নির্যাতন! আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই, যেন আর কোনো মা-বাবার সন্তান এভাবে নির্যাতিত না হয়।”
এলাকাবাসী দ্রুত অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।