কালীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদে জাল স্বাক্ষরের অভিযোগ, তদন্তের নির্দেশ

আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:-

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বারদের না জানিয়ে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে রেজুলেশন করে কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে প্যানেল চেয়ারম্যান, এক মেম্বার ও ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে ৮ জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব,

জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম

৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হযরত আলী এবং ইউপি সচিবের যোগসাজশে মেম্বারদের না জানিয়ে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি ভাতা ও উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকা অনুমোদন করা হয়েছে।

এর মধ্যে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা,মাতৃত্বকালীন ভাতা, কাবিখা, কাবিটা, টিআর, এডিবি উন্নয়ন সহায়তা এবং ভিজিডির অনলাইন আবেদন সংক্রান্ত তালিকা বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ মেম্বাররা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের না জানিয়ে পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে, ৫ মার্চ তাদের মৌখিকভাবে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জাকির হোসেন বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে আমাদের না জানিয়ে তারা সব কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল।

কিছুদিন আগে আমাদের ডেকে মিটিং করে জানানো হয় যে, রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করলে সম্মানী ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে।”

৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জাফর আলী জানান, “এতদিন মিটিং হয়নি, সম্প্রতি হয়েছে। এখন কোনো সমস্যা নেই।”

সংরক্ষিত নারী মেম্বারদের একজন জানান, “গত সপ্তাহে আমাদের ডেকে মিটিং করা হয় এবং আলোচনার মধ্যেই স্বাক্ষর নেওয়া হয়।”

অন্যদিকে, অভিযোগের বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন,

“আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রতিটি প্রকল্পের সভাপতি আলাদা মেম্বাররা।

তাদের স্বাক্ষর ও মিটিং ছাড়া কোনো কাজ সম্পন্ন হয়নি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা যুথিকা বিশ্বাস জানান,

“অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী উভয় পক্ষকে ডেকে বিষয়টি তদন্ত করে সমাধান করা হবে।”

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, তদন্ত শেষে সত্য উদঘাটন করে প্রশাসন কী সিদ্ধান্ত নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *