জীবননগর বেনীপুরে বিয়ের দাবিতে অনশন: অবশেষে পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ে গৃহবধূর

জীবননগর অফিস:

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বেনীপুর গ্রামে পরকীয়ার জেরে তিন দিন ধরে অনশন পালন শেষে প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন গৃহবধূ বৃষ্টি খাতুন (২৫)। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বৃষ্টি খাতুন তার অনশন ভঙ্গ করেন।

দাম্পত্য জীবন ও পরকীয়ার সূত্রপাত

ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার কাজিরবেড় গ্রামের মতিার রহমানের মেয়ে বৃষ্টি খাতুন প্রায় ৮-১০

বছর আগে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বেনীপুর বিত্তিপাড়া গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে হাসানুর রহমানের (৩০) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

কিন্তু সংসার জীবন চলার মধ্যেই বৃষ্টি খাতুনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই গ্রামের মিন্টু মিয়ার ছেলে, এক সন্তানের জনক সাজু হোসেনের সঙ্গে।

গোপনে চলতে থাকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক, যা ধীরে ধীরে গভীর হতে থাকে।

অবৈধ সম্পর্কের অবসান এবং পুলিশের হস্তক্ষেপ

কিছুদিন আগে স্বামী হাসানুর রহমানের অনুপস্থিতির সুযোগে বৃষ্টি খাতুন প্রেমিক সাজুকে তার ঘরে ডেকে নেন।

একপর্যায়ে হাসানুর রহমান বাড়িতে ফিরে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলেন।

পরে তাদের আটক করে থানায় সোপর্দ করেন এবং পুলিশ অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে তাদের আদালতে প্রেরণ করে।

জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সাজু হোসেন প্রথমে বৃষ্টি খাতুনকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।

এ অবস্থায় রবিবার সকাল ৯টার দিকে বৃষ্টি খাতুন প্রেমিক সাজুর বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন।

অবশেষে পরিণতি: অনশন থেকে বিয়ে

বিয়ের দাবিতে অনড় থাকা বৃষ্টি খাতুনের অনশনের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে সাজু হোসেন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

তবে বৃষ্টি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। পরবর্তীতে উভয় পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার আরিফ মণ্ডল বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “বৃষ্টি খাতুনকে তার স্বামীর বাড়িতে পরকীয়া

প্রেমিকসহ হাতেনাতে ধরা হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তাদের আদালতে সোপর্দ করে।

তবে পরবর্তীতে বৃষ্টির অনশনের কারণে পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।”

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, “জনগণ তাদের হাতে-নাতে ধরে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছিল।

আমরা তাদের আদালতে পাঠাই। পরে কী ঘটেছে, তা পরিবারগুলো ভালো জানে।”

এ ঘটনার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের পরকীয়া সম্পর্কের অবসান ঘটলেও, এলাকায় এ নিয়ে চাঞ্চল্য রয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *