জীবননগর ধোপাখালীর গরু ব্যবসায়ীকে সন্তোষপুর থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ

জীবননগর অফিস:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী গ্রামের রিপন হোসেন(৫৪) নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে একটি সংঘবদ্ধ চক্র সন্তোষপুর গ্রামের রাস্তা থেকে রাতের বেলা তুলে নিয়ে

আকন্দবাড়ীয়া আবাসন প্রকল্পের ঘরে আটকিয়ে নির্যাতনের পর মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি গত ১ মার্চ সংঘটিত হলেও আপস
নিস্পত্তির অপেক্ষায় ভুক্তভোগী পরিবার ঘটনার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেনি।

ভুক্তভোগী পরিবার বিচার না পেয়ে শেষ পর্যন্ত থানায়
মামলার প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন।

জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী মন্ডলপাড়ার মৃত রমজান আলীর ছেলে রিপন হোসেন একজন ক্ষুদ্র গরু ব্যবসায়ী। তিনি এলাকার বিভিন্ন কৃষকের নিকট থেকে গরু কিনে তা বিভিন্ন পশু হাটে বিক্রি করে থাকেন।

ভুক্তভোগী রিপন হোসেন বলেন,আমি চলতি বছরের ১ মার্চ   রাত সাড়ে ৭টার দিকে বাইসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন।  এসময় সাঈদ হোসেন (২৫) তার মোবাইল
ফোন-০১৯৮৪৮৩৮১৫০ থেকে ফোন করে জানান যে, তার কাছে বিক্রির জন্য একটি গরু আছে। আমি সরল বিশ্বাসে দেখা করতে গেলে, সাঈদ তাকে

সন্তোষপুরের একটি দোকানে বসিয়ে রেখে কৌশলে আরও কয়েকজন সহযোগীকে ডেকে আনে।

পরবর্তীতে, অভিযুক্ত সাঈদ হোসেন, জসিম উদ্দিন (৪২), আশরাফুল (৪৮), লালু মিয়া (৪৫) ও রতন (৫০) মিলে দুইটি মোটর সাইকেলে আমাকে অপহরণ করে আকন্দবাড়ীয়া আবাসন প্রকল্পের একটি ঘরে আটকে রাখে।

সেখানে রাতভর আটকে রেখে তাকে মারধর করা হয় এবং গরু ব্যবসার ২৪ হাজার  টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। তারা আমাকে মারপিট করে বাম হাঁটুতে মারাত্মক জখম হয় এবং হাড় ভেঙে যায়।

পরের দিন ২ মার্চ সকাল ১১ টার দিকে, আমার ভাই লিটন হোসেন এবং মাধবখালী খাপাড়ার বাসিন্দা শাহজান  ৪০ হাজার  টাকা পরিশোধ করেন এবং বাকী ৩০ হাজার টাকার জামিনদার হিসাবে শাহজান দায়ভার নিয়ে আমাকে মুক্ত করেন।

ভুক্তভোগী রিপন হোসেন জানান, অভিযুক্ত আশরাফুল দুই মাস আগে তার বিকাশ নম্বরে (০১৭২২৪৭০৩৯৮)  ৭০ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন, যা ভারতের বসবাসরত তার ভাইপো শামীমের পাওনা টাকা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, এই
অর্থ ছিল ভারতীয় মাদকের ব্যবসার লেনদেন, যা তার অজান্তে তার বিকাশ নম্বরে পাঠানো হয়েছিল।

ভারত থেকে মাদকের চালান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, অভিযুক্তরা টাকা ফেরত চাইলে ব্যর্থ হয়। ফলে, তারা রিপন হোসেনকে তুলে নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।

বর্তমানে তারা ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে যে,

তারা নাকি রিপন হোসেনের কাছে গরু বিক্রির টাকা পাবে।


ভুক্তভোগী রিপন হোসেন তিনি বলেন, “আমি একজন সাধারণ গরু ব্যবসায়ী। এই চক্র আমাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অপহরণ ও নির্যাতন করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার চাই।”

স্থানীয়দের মতে, অভিযুক্ত চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। তারা মাদক ব্যবসার সাথেও যুক্ত থাকতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ওয়ার্ড সদস্য ও বিএনপি দোজাউদ্দিন বলেন,ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে কি কারণে ঘটনা ঘটেছে তা আমার জানা নেই।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ  মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন,ঘটনার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে,তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *