বিশেষ প্রতিবেদন,আবু সাইদ শওকত আলী:-
যশোরের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল একটি সংঘবদ্ধ অনলাইন জুয়া পরিচালনাকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
দীর্ঘদিন সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে নজরদারি চালিয়ে এই চক্রের কার্যক্রম শনাক্ত করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে উঠে এসেছে, এই চক্রটি 1XBet, Melbet, এবং Linebet-এর এজেন্ট নিয়ে অনলাইন জুয়ার অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছিল।
চক্রটি নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে অন্যের নামে নিবন্ধিত বিকাশ সিম ব্যবহার করে বিগত এক বছর ধরে অনলাইন জুয়া পরিচালনা করছিল।
এছাড়াও, তারা গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ইউটিউব চ্যানেলের আড়ালে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
জুয়া চক্রের অর্থ পাচারের কৌশল
তদন্তে জানা যায়, অভিযুক্তরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রাম গ্রুপের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার প্রচার চালাত।
জুয়ার অর্থ সংগ্রহ করা হতো বেনামী বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, যা পরবর্তী সময়ে ডলারে রূপান্তর করে Binance
এবং Swap.Paykassma প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভারত ও রাশিয়ায় পাচার করা হতো।
গ্রেফতার ও জব্দকৃত আলামত
উপযুক্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে, যশোর সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় এসআই (নিঃ) শিবু মন্ডলের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গতকাল (২৭ মার্চ, ২০২৫) রাত ৯:০০
টায় ঝিকরগাছা থানাধীন হাজের আলী গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের দখল থেকে মোবাইল ও ল্যাপটপে অনলাইন জুয়ার লগইন করা অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করা হয়।
তদন্তে উঠে আসা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা প্রতিদিন গড়ে ১০ লক্ষ টাকার লেনদেন করত।
এই চক্রের মূলহোতা নাজমুল ওয়াহীদ ওরফে মিল্লাত এবং তার ভাই নাজমুল শাহাদাত অনলাইন জুয়া পরিচালনায় নেতৃত্ব দিত।
গ্রেফতারকৃতদের পরিচয়:
১. নাজমুল ওয়াহীদ ওরফে মিল্লাত (৩৪)
২. মোঃ নাজমুল শাহাদাত (৩০)
৩. মোঃ মাহাবুবুর রহমান ওরফে মাসুম (৩২)
৪. মোঃ আসাদুল ইসলাম (২২)
৫. মোহাম্মদ জাহিদ হাসান (২২)
৬. মোঃ তারেক রহমান (২২)
জব্দকৃত আলামত:
- মোবাইল ফোন: ১০টি
- স্যামসাং ট্যাব: ২টি
- ল্যাপটপ: ৫টি
- সিম কার্ড: ৩০টি
- হার্ডডিস্ক: ৩টি
- বিকাশ এজেন্ট ব্যালান্স: ২,৬৩,০০০ টাকা
আইনি ব্যবস্থা ও পরবর্তী পদক্ষেপ
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনলাইন জুয়া ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সাধারণ জনগণকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং
সন্দেহজনক কার্যক্রম সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।