গঞ্জেরখবর ডেস্ক:
চার দিনের সরকারি সফর শেষে চীন থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৯ মার্চ) রাত ৮টা ১০ মিনিটে তার ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
চীন থেকে ঢাকা ফেরার প্রক্রিয়া
এর আগে বিকেল ৩টায় চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইটে তিনি বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রধান প্রটোকল অফিসার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মন্ত্রী হং লেই।
সফরের গুরুত্বপূর্ণ দিক
এই সফরে প্রধান উপদেষ্টা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকগুলোর মূল বিষয়বস্তু ছিল দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা। এ সময় বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
ড. ইউনূস চীনের হাইনানে অনুষ্ঠিত বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে ভাষণ দেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন। তার বক্তৃতায় তিনি এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন, টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতার সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও শিক্ষাক্ষেত্রে সম্মাননা
চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের (এক্সিম ব্যাংক) চেয়ারম্যান চেন হুয়াইউর সাথে বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং ঋণ সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেন। চীন বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং শিল্পখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ। শনিবার সকালে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তাকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন, যেখানে তিনি উদ্ভাবন, সামাজিক ব্যবসা এবং তরুণদের ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সফরের তাৎপর্য
এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হলো। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সফর ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যকার বিনিয়োগ ও কৌশলগত সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার বহুমুখী সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।