আবু সাইদ শওকত আলী,নিজস্ব
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না বাওড়ের প্রায় একশ’ বিঘা সরকারি জমি দখলের চেষ্টা করছে একটি প্রভাবশালী মহল।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে বাওড়ের পাড় কেটে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি ফেলে ভূমি সমতল করা হচ্ছে।
এতে বাওড়টির স্বাভাবিক নব্যতা ও পরিবেশগত ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেড়াদী গ্রামের কিছু ব্যক্তি বাওড়ের জমিকে নিজেদের দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছেন।
যদিও আদালতের রায়ে সেই দাবি খারিজ হয়ে গেছে। এরপরও তারা পুনরায় ভেকু মেশিন দিয়ে বাওড়ের জমি ভরাট করে চাষযোগ্য করার চেষ্টা করছেন।
বিষয়টি নিয়ে গত সোমবার (৭ এপ্রিল) বাওড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য লাল্টু মন্ডলের নেতৃত্বে শতাধিক মৎস্যজীবী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাগান্না বাওড়ের আয়তন ১২৬.৪৫ একর। এর মধ্যে ২৯.৯০ একর জমি নিয়ে ২০০০ সালে বেড়াদী গ্রামের ৭৯ জন ব্যক্তি আদালতে মামলা করেন।
তবে ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ জেলা যুগ্ম জজ আদালত মামলাটি খারিজ করে সরকারের মালিকানা বহাল রাখেন।
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের দাবি, মামলায় পরাজিত হয়েও কিছু ব্যক্তি বাওড়ের জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, বেড়াদী গ্রামের হবিবার রহমান, মুনছুর আলী মাস্টার, খোকন, আকবর আলী, ঠান্ডু মিয়া ও বিশারত আলী মাটি কেটে জমি ভরাট করছেন।
বাওড়ের মৎস্যজীবী আলমাস হোসেন বলেন, “বাওড়টি আমাদের জীবিকার উৎস। ১৯৭২ সাল থেকে প্রভাবশালীরা মামলা করে হয়রানি করছে। এবার তারা সরাসরি ভেকু মেশিন চালিয়ে বাওড় দখলের চেষ্টা করছে।”
এ বিষয়ে হবিবার রহমান বলেন, “আমাদের নামে পুরাতন রেকর্ড রয়েছে। আমাদের জমি অন্যায়ভাবে সরকারি খতিয়ানে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছি।”
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস বলেন, “সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসন সজাগ আছে।
খবর পেয়ে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেছেন।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানান, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে প্রাকৃতিক এই জলাশয়টি ধ্বংস হয়ে যাবে এবং জীবিকা হারাবে শত শত মৎস্যজীবী পরিবার।