লোহাগাড়ার আঁধার ভেদ করে আশার আলো – ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে ছোট্ট আরাধ্য

আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছিল ১১টি তাজা প্রাণ, এক নিমিষেই স্তব্ধ করে দিয়েছিল একাধিক পরিবার।

সেই ঘটনার ভয়াবহ স্মৃতি আজও চোখে জল এনে দেয় স্বজনহারাদের। তবে সেই অন্ধকার মুহূর্তের মাঝে আশার এক নতুন আলো হয়ে উঠে এসেছে ছোট্ট আরাধ্য।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এনে ভর্তি করা হয় স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)।

সেখানে জীবনের সঙ্গে লড়াই শুরু করে এই ছোট্ট শিশুটি। চিকিৎসকদের নিরলস প্রচেষ্টা ও সবার প্রার্থনার ফলে ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে এগিয়ে চলেছে সে।

স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে আরাধ্যের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।

তার শরীর এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সাড়া দিচ্ছে, ধীরে ধীরে গ্রহণ করছে হালকা খাবার, চিকিৎসকদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে এবং হাত বাড়িয়ে ধরছে পরিচিতদের।

তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে এখনো বেশ কিছু সময় লাগবে এবং তাকে চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখতে হবে আরও কিছুদিন।

এই সময়টাতে আরাধ্যের পাশে ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে আছেন সনাতনী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দুই সদস্য – তপতী ও পিংকি দে।

তারা দিনরাত নিবেদিত প্রাণের মতো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ছোট্ট এই মেয়েটিকে। পিংকি দে বলেন, “আরাধ্য মামনি ভগবানের কৃপায় এবং সবার আশীর্বাদে এখন সুস্থ হয়ে উঠছে।

আমাদের সাথে সে কথাও বলছে। তবে এখনও তাকে জানানো হয়নি তার মা-বাবা আর বেঁচে নেই। বলা হয়েছে, তারা অন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

আছেন।”

আরাধ্যের এই ফিরে আসা যেন এক নতুন ভোরের আগমনী বার্তা। লোহাগাড়ার সেই বেদনাবিধুর ঘটনার মধ্যেও ছোট্ট এই প্রাণ সঞ্চার করেছে নতুন আশার আলো। তার নির্দোষ মুখের হাসিই হতে পারে সেই ভয়াবহতার একমাত্র সান্ত্বনা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ছোট্ট আরাধ্যের সুস্থতার জন্য চলছে দোয়া ও প্রার্থনার ঢল। সবাই একটাই কামনা করছেন – সে যেন খুব দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।

ছোট্ট আরাধ্যের হাসিই হোক পুরো জাতির জন্য আশার বার্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *