আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
“বিষাক্ত হচ্ছে কুমার নদ অন্ধ পরিবেশ অধিদপ্তর ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর সহকারী পরিচালক ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের মোহাম্মদ মুন্তাসির রহমান এই প্রতিবেদক কে মন্তব্য করেন
“নদীর দখল ও দূষণ রোধে সরকারের প্রচলিত আইনের আওতায় কোন কোন সংস্থার দায়বদ্ধতা আছে সেটা আগে জানতে হবে।
একটা গদবাধা নিউজ করে দিলেই তো হবে না। আপনাদেরও অনেক জানার প্রয়োজন রয়েছে “।
তার এই মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়ক।
তার এই বক্তব্যে সচেতন মহলের অনেকেই বলছেন,নদীর দখল ও দূষণ রোধে কোন কোন
সংস্থার দায়বদ্ধতা আছে, সেটা জানার আগে পরিবেশ অধিদপ্তর কি এত দিন হাত গুটিয়ে বসেছিল?
একটা পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে যখন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তখন তাদের প্রথম কাজ হওয়া উচিত দ্রুত সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া, দোষারোপ করা নয়।
নদীর পরিবেশ দূষণ রোধে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসার দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। এটি তাদের মূল কাজ এবং আইনি বাধ্যবাধকতা।
পরিবেশ রক্ষা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই এই সংস্থাটি তৈরি করা হয়েছে। যখন একটি নদী দূষিত হচ্ছে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে, তখন পরিবেশ অধিদপ্তরকে তাৎক্ষণিকভাবে দূষণের উৎস চিহ্নিত করতে,
দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং নদীটিকে দূষণমুক্ত করার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
তাদের এই মন্তব্য প্রকারান্তরে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা। “আপনাদেরও অনেক জানার প্রয়োজন রয়েছে” –
এই ধরনের মন্তব্য সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধ করার এবং নিজেদের অকর্মণ্যতা ঢাকার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সংবাদমাধ্যম জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে এবং পরিবেশ দূষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
অবশ্যই, নদীর দূষণ রোধে অন্যান্য সংস্থারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষা এবং অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে সহায়তা করতে পারে।
উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় পর্যায়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে সাহায্য করতে পারে। উপজেলা ভূমি অফিস নদীর তীরবর্তী সরকারি জমি রক্ষা এবং অবৈধ দখলদারদের চিহ্নিত করতে পারে।
তবে, এই সকল সংস্থার কার্যক্রম পরিবেশ অধিদপ্তরের সক্রিয় পদক্ষেপ এবং তদারকির উপর নির্ভরশীল।
পরিবেশ অধিদপ্তর যদি প্রথম থেকেই তাদের দায়িত্ব পালন করত এবং নিয়মিত নজরদারি চালাত, তাহলে হয়তো নদীর দূষণ আজ এমন ভয়াবহ রূপ নিত না।
অতএব, কোনো রকম দ্বিধা ছাড়াই বলা যায়, নদীর পরিবেশ দূষণ রোধে সর্বপ্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের।
তাদের গড়িমসি এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
জনগণের প্রত্যাশা, পরিবেশ অধিদপ্তর অবিলম্বে তাদের ভুল স্বীকার করে সক্রিয় হবে এবং নদীকে দূষণমুক্ত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
অন্যথায়, এই ধরনের মন্তব্য জনমনে কেবল হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দেবে।