আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মুরতুজ আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়, তিনি নিয়মিত সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে থাকেন এবং সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির পরিবর্তে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণ করেন।
জানা যায়, মুরতুজ আলী ২০১৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন।
এ সময় তার বিরুদ্ধে ঘুষ, ভুয়া নামজারি এবং সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে হস্তান্তরের অভিযোগ ওঠে।
২০২৩ ও ২০২৪ সালে তাকে নড়াইল ও রাজশাহীতে বদলির আদেশ দেওয়া হলেও তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় তা কার্যকর হতে দেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জে দীর্ঘ সময় কর্মরত থেকে তিনি একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে
তোলেন, যার সঙ্গে অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন যুক্ত ছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, নামজারি, বন্দোবস্ত ও জরিপ সংক্রান্ত ফাইলে প্রতিটি কেসে ঘুষ আদায় করতেন ১,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকারও বেশি।
এছাড়া, বিধিবহির্ভূতভাবে অফিসের ফ্রন্ট ডেস্কে বহিরাগত সুজন নামের একজনকে বসিয়ে আবেদন গ্রহণের নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে।
ড্রাইভার ও নাইট গার্ডের মাধ্যমেও বিভিন্ন ‘পার্টি’ ম্যানেজ করার অভিযোগ উঠেছে।
কালীগঞ্জের শ্রীরামপুর গ্রামের এক ভুক্তভোগী জানান, নামজারির জন্য তাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
এমনকি ২০১৮ সালে সরকারি গাছ কেটে তা দিয়ে ব্যক্তিগত আসবাবপত্র তৈরির ঘটনাও স্থানীয়ভাবে আলোচিত।
কোটচাঁদপুরে বদলির পরও তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ উঠছে। এলাঙ্গী ইউনিয়নের এক কৃষক জানান,
আদালতের আদেশে জমি সার্ভের কথা থাকলেও, মুরতুজ আলী সরোজমিনে এসে তার কাছে টাকা দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার মুরতুজ আলী বলেন, “একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে তদন্তে বের হয়ে আসবে।”
কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ আমার জানা নেই।
তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, সরকারি সেবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এসব অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।