গঞ্জের খবর ডেস্ক:-
নেত্রকোনার মদন উপজেলায় এক বিধবার ওপর বর্বর হামলার অভিযোগ উঠেছে। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই বিধবার গোয়াল ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন আব্দুল খালেক নামে এক যুবক।
সোমবার গভীর রাতে উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের খাগুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে পুড়ে মারা যায় একটি বাছুরসহ
তিনটি গরু এবং গুরুতর আহত হয় আরও দুটি গরু। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন লাখ টাকা।
ভুক্তভোগী লাকী আক্তার বারহাট্টা উপজেলার দেশীউড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী।
২০১৭ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি ঢাকার মাস্টারবাড়ি এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি
করে তিন সন্তানকে লালন-পালন করে আসছেন। এরমধ্যে তার বড় মেয়েকে ইতোমধ্যে বিয়ে দিয়েছেন।
লাকীর কর্মস্থলে পরিচয় হয় আটপাড়া উপজেলার আড়াগাঁও গ্রামের মৃত মনফর আলীর ছেলে আব্দুল খালেকের সঙ্গে, যিনি পেশায় একজন সিএনজি চালক।
এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই খালেক তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বিভিন্ন সময়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।
প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি একাধিকবার হুমকি দেন, এমনকি মোবাইলে জানিয়ে দেন—প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে তার বাবার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেবেন।
গত ২১ এপ্রিল লাকী আক্তার এই হুমকির ভিত্তিতে নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পরপরই এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
লাকীর চাচাতো ভাই রতন মিয়া জানান, “আমার বোনকে বিয়ের জন্য খালেক অনেকদিন ধরেই
চাপ দিয়ে আসছিল। বিয়ে না করায় একাধিকবার হুমকি দেয়। মোবাইলে রেকর্ডকৃত সেই হুমকি আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।
সোমবার রাতে আগুন দিয়ে আমাদের তিন লাখ টাকার মতো ক্ষতি করেছে সে। আমরা থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
মদন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, “ঘটনার খবর
পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত আব্দুল খালেকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
সমাজকর্মীরা একে নারীর প্রতি সহিংসতার জঘন্য উদাহরণ হিসেবে দেখছেন এবং দ্রুত বিচার কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন।