গৌরীপুরে তিন মাদ্রাসাছাত্রীসহ পাঁচ বোন নিরাপত্তাহীনতায়: ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলনে দাবি

সাজ্জাতুল ইসলাম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ):

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় তিন মাদ্রাসাছাত্রীসহ পাঁচ বোনকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পরিবারটির সদস্যরা। পরিবারের দাবি, পুলিশের কাছে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও তারা সঠিকভাবে প্রতিকার পাচ্ছেন না।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের তেরশিরা গ্রামে নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিবারের সদস্য মারিয়াম আক্তার।

তিনি জানান, একটি জমি সংক্রান্ত মামলার জেরে আসামিপক্ষ জামিনে মুক্ত হয়ে তাদের পরিবারের ওপর ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।

মারিয়াম বলেন, “আমার বাবাকে গলাকেটে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বোনের সবাই ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত বা অধ্যয়নরত।

এর মধ্যে তিনজন হাফেজা, একজন মাওলানা এবং একজন হেফজ শাখার ছাত্রী।

প্রতিপক্ষ প্রকাশ্যে আমাদের ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে, এমনকি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী আবু বক্কর সিদ্দীক, জোসনা খাতুন ও মাছুমা আক্তার।

তারা অভিযোগ করেন, একাধিকবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও মামলা করলেও প্রতিপক্ষ জামিনে বেরিয়ে এসে হুমকি দিচ্ছে।

এর ফলে মাদ্রাসায় যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে, এমনকি তারা বাড়ির বাইরে বের হতেও ভীত।

পাশের বাড়ির বাসিন্দা ফারুক আহমেদ জানান, পুলিশি নির্দেশনায় তিনি সাদা রঙের একটি তালা ভেঙে তাদের ঘর থেকে মুক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, “সাব-ইন্সপেক্টর খোরশেদ আলী আমাকে বলেন, প্রতিপক্ষের সাথে কথা বলে মেয়েদের বের করে দিতে।”

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, “গ্রামে ঝগড়ার সময় অনেকে বাড়াবাড়ি করে কথা বলে।

তবে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা হয়েছে এবং আসামিরা জামিনে আছেন। আমরা পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টহল ও নজরদারি বৃদ্ধি করেছি।”

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা মাযহারুল আনোয়ার বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ মামলা

নেওয়া হয়েছে। পুলিশ কোনো অভিযোগ বাদ দেয়নি কিংবা পরিবর্তন করেনি। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।”

ভুক্তভোগী পরিবারটির দাবি, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *